আসাদুজ্জামান, ডিআইইউ প্রতিনিধি:
প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
লিঙ্গবৈষম্য দূর করে নারীর প্রতি সম্মান ও সমানাধিকার জানাতেই দিবসটি উদযাপিত হয়। চলতি বছরেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এটি এমন একটা দিন, যা সূচনাপর্ব থেকে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে নারীদের সম্মানের কথা মনে করিয়ে দেয়। নারী দিবস উপলক্ষে নারীনেত্রীদের ভাবনা ও মতামত তুলে ধরা হল।
লেখিকা ও নারীনেত্রী, গাইবান্ধা জেলা নারীমঞ্চের আহবায়ক, নাসরীন রেখা বলেন, সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। তারপর কেন এই লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে নারীদের প্রতি? আমরা সচেতন নাগরিক হিসাবে সবাই অবগত । নারীরা ঘরে, বাহিরে, অফিস আদালতে প্রত্যক্ষ পরোক্ষে ভাবে যৌন হয়রানি ও শিশু, বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী মানুষ রূপি শকুনের লালসার বলি হচ্ছে। আই এম এ জাহেলিয়ার যুগে কন্যা শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পরে জীবিত কবর দেওয়া হতো।
কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীতে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে বিশেষ করে নারীদের সন্মান হানিকর ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। যার কারণে নারীরা আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে ভয়াবহ পরিনতির মুখোমুখি হতে হবে। নারীরা সাধারণত শারীরিক, মানষিক, আর্থিক ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকে।
আবার আমাদের অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলে ও কিন্তু অবস্থানের পরিবর্তন তেমন হয়নি। অবস্থা বলতে পুষ্টি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উপার্জন ইত্যাদি। অপর পক্ষে অবস্থান বলতে সরাসরি ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ, সম্পদের মালিকানা, অধিকার, পছন্দ অপছন্দ এবং মর্যাদা। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ব্যাপক প্রচার ও প্রচারণার মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে আগামী প্রজন্মকে সোনার বাংলায় সোনার মানুষ হিসাবে বিশ্বায়নের যুগে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারি।
গাইবান্ধা জেলার নারীনেত্রী ও সমাজসেবক, শাবানা বেগম বীনার মতে, সমগ্র বিশ্বের মত আমাদের দেশেও প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমান সরকার নারী পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এখন নারীরা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতেছে সুনামের সাথে। বিশেষ করে সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে এখন মায়ের পরিচয় ও ব্যবহার করা যাবে এটা আন্তর্জাতিক নারী দিবসের একটি বড় প্রাপ্তি।
সহস্র সহস্র নারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, শিক্ষা, অফিস-আদালত সর্বত্র মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে পেশাজীবী এক নারীগোষ্ঠী তৈরি করেছেন বাংলাদেশে। ব্যাংক, কলকারখানায় আজ ৮০ শতাংশ নারী কাজ করছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরো বেশি। কূটনৈতিক মিশনে এর মধ্যেই বেশ কয়েকজন নারী নিযুক্ত হয়েছেন। এসব পেশায় আরো নারী নিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর