মাহবুবুল হক খান, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুর সরকারী সিটি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র শাহরিন আলম বিপুল (১৮) হত্যার মুল হত্যাকারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ-২০২৩) দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে ৪ জনকে গ্রেফতারের সংবাদ নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।
আটককৃতরা হলেন-দিনাজপুর সদর উপজেলার শালকী বোয়ালমারী গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে কলেজ ড্রপার ছাত্র দেলোয়ার হোসেন (২৪), দিনাজপুর উপশহর পুরাতন পাওয়ার হাউজ এলাকার উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে শাকিব শাহরিয়ার (৩০), সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে আশরাফুল হোসেন মিলন (২৮) ও উপশহর হাউজিং মোড়ের এলাকার হামিদুর রহমানের ছেলে আসিফ মাহমুদ হৃদয় (২৬)।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, গত ৬ মার্চ মঙ্গলবার দিনাজপুর স্টেডিয়াম গ্যালারির নিচে টয়লেটের পিছনে ময়লা আর্বজনার আড়ালে শাহরিন আলম বিপুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । লাশের পাশ থেকে পুলিশ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করার পর অভিযানে নামে। মঙ্গলবার রাতেই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে মুলহত্যাকারী দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যা সাথে সরাসরি জড়িত শাকিব শাহরিয়ার , আশরাফুল হোসেন মিলন, আসিফ মাহমুদ হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরস্পর যোগসাজসে কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুলকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে দিনাজপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারির পিছনে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে। পরে চাকু দিয়ে জবাই করে হত্যা নিশ্চিত করার পর হত্যাকারীরা পালিয়ে যায় ।
পুলিশ সুপার আরো জানান, কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুল একই কলেজ পড়ুয়া (পুরবী) ছদ্ম নামে এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই প্রেমের সর্ম্পক কলেজ ড্রপার ছাত্র দেলোয়ার হোসেন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। তাই শাহরিন আলম বিপুলকে সরাসরি হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সেই পরিকল্পনা অনুয়ারী দেলোয়ার হোসেন ফেক ফেইজ বুকের মাধ্যমে শাহরিন আলম বিপুলের সাথে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। এরই এক পর্যায়ে গত ৪ মার্চ ক্যামেরা ভাড়া দেওয়া হবে এই বলে শাহরিন আলম বিপুলকে দিনাজপুর স্টেডিয়ামে ডেকে আনা হয়। বিপুল স্টেডিয়ামে আসার পর পূর্ব পরিকল্পনা অনুয়ায়ী দেলোয়ার হোসেন , শাকিব শাহরিয়ার , আশরাফুল হোসেন মিলন ও আসিফ মাহমুদ হৃদয় তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পিছন দিক থেকে বিপুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করার পর বিপুল মাটিকে লুটিয়ে পড়ে যায়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করে তারা ৪ জন পালিয়ে যায়। লাশটি দিনাজপুর স্টেডিয়াম গ্যালারির নিচে টয়লেটের পিছনে ময়লা আর্বজনা দিয়ে ঢেকে পালিয়ে যায়। গতি ৬ মার্চ লাশটি পচে গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য এম আব্তুর রহিম কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পরে নিহত বিপুলের ভাই শাহরিয়ার আলম বাদি হয়ে একজনের দাম উল্লেখ করে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বার ২২/১৯১।
এমআই