নিজস্ব প্রতিবেদক:
কয়েক সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলছে মুরগির দাম। যারা একসময় প্রতিদিন অন্তত একবার খাবারের পাতে ব্রয়লার মুরগি রাখতেন তারা এখন সপ্তাহে একদিন খেতে পারছেন না অপেক্ষাকৃত কম দামের মাংসটি। বেড়েছে ডিমের দামও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজান ঘিরে আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে ডিম ও মুরগির বাজার। ফলে এই দুটি নিত্যপণ্যে আপাতত স্বস্তির কোনো আভাস নেই।
শুক্রবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪৫-২৫৫ টাকায়। লেয়ার সাদা জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। কেজিতে আরও ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে লাল জাতের লেয়ার। সোনালি জাতের মুরগির প্রতি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধরা-ছোঁয়ার অনেক বাইরে চলে গেছে দেশি মুরগির দাম।
যারা একসময় বড় ব্রয়লার মুরগি কিনতেন তারা কিনছেন ছোট মুরগি। তাও অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হচ্ছে। সব ক্রেতার একটাই কথা, কেন এত দাম বেশি?
মুরগির দামের ঊর্ধ্বগতিতে স্বস্তিতে নেই বিক্রেতারাও। তারা বলছেন, বিক্রি আগের থেকে অনেক কমেছে। রাজধানীর মুগদা এলাকার মায়ের দোয়া পোল্ট্রি হাউজের বিক্রেতা বলেন, আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি আমার কেনা পড়ত ১০০-১১০ টাকায়। তা বিক্রি করেছি ১৩০-১৪০ টাকায়। এখন এক কেজি মুরগি ২১০-২২০ টাকায় কিনে ২৪৫-২৫০ বিক্রি করতে হচ্ছে। আবার পরিবহন খরচ আছে। সেটাও বেড়েছে। খুব বেশি পর্তা হচ্ছে না।'
এই বিক্রেতা আরও বলেন, 'মানুষ আগে বড় মুরগি খুঁজত। এখন খোঁজে ছোট মুরগি। বেচাকেনাও অনেক কমে গেছে। আমাদের কম দামে পেলে কম দামে বিক্রি করতে তো আর সমস্যা নাই। আমরা যত যত বেশি বিক্রি করতে পারবো ততো লাভ।’
এদিকে দাম বেড়েছে ডিমেরও। প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা দরে। এক ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। দেশি মুরগির ডিম এক হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে হাঁসের ডিম। মাস দুয়েক আগে ফুটপাতে ফার্মের মুরগির বয়েল করা ডিম বিক্রি হতো ১০ টাকা, হাসের ডিম ১৫ টাকা। এখন একটা বয়েল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। হাসের ডিম ২৫ টাকা।
একই চিত্র দেখা গেছে মাছের বাজারেও। বছরখানেক আগেও যে পাঙ্গাস মাছ ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, এখন সেই পাঙ্গাস কিনতে হচ্ছে প্রায় ২০০ টাকা কেজিতে। একই অবস্থা তেলাপিয়া মাছের। ১২০ টাকা কেজির তেলাপিয়া মাছ এখন ২০০ টাকার উপরে। আড়াইশ টাকার নিচে নেই রুই-কাতল-মৃগেল মাছ। পাবদা-চিংড়ি-ইলিশ তো এখন এলিট শ্রেণির খাবার। কইয়ের তেলে কই ভাজারও এখন আর উপায় নেই। চাষের কই মাছও সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
এমআই