নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীতে গরুর মাংস কিনতে গিয়ে ক্রেতার হিসেব না মেলার গল্প বহুদিনের। কারণ কোনো নিয়মনীতির বালাই না থাকায় যেমন খুশি তেমন চলছে গরুর মাংসের বাজার। এতদিন ধরে যে দামে মাংস বিক্রি হচ্ছিল সেটাই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। অনেকে কোরবানির মৌসুম ছাড়া গরুর মাংস খেতে পারতেন না এমন উদাহরণও আছে। বর্তমানে গরুর মাংসের কেজি ৮শ' ছুঁয়েছে কিছু কিছু জায়গায়। সাড়ে ৭শ'তেও মিলছে কোথাও কোথাও। আর খাসির মাংস তো হাজার ছাড়িয়েছে বেশ আগেই। সবশেষ প্রোটিনের চাহিদা পূরণের ভরসা ব্রয়লার মুরগি কিনতে গিয়েও হিসেব মেলাতে পারছেন না ক্রেতারা।
কারণ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির প্রতিকেজি ২৫০ টাকা করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বাজারে চাহিদা থাকলেও যথেষ্ট সরবারহ না থাকা, মুরগির বাচ্চা নিয়ে ‘সিন্ডিকেট’ এর দৌরাত্ম ও মুরগি আনা-নেওয়ায় খরচ বাড়ার অজুহাত দেওয়া হচ্ছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ও পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে। অন্যদিকে মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে এমন পরিস্থিতি বলছেন বিক্রেতারা।
তবে সাধারণ মানুষের কোনো কিছুতেই হিসেব মিলছে না। বিশেষ করে নিয়মিত এক ধরণের বাজেটে বাজার করা মানুষেরা পড়েছেন ভীষণ বিড়ম্বনায়। আগে যারা ব্রয়লারের নামও মুখে নিতেন না, তারা এখন ব্রয়লার কিনে মুরগি খাওয়ার শখ মেটাচ্ছেন।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, মাংস প্রোটিনের ভালো উৎস। যা দেহ গঠন, বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয়পূরণে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদদের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসে ১২১ ক্যালরি, ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ১৮০ কিলোক্যালরি ও ২১ গ্রাম প্রোটিন থাকে। আর প্রতি ১০০ গ্রাম খাসির মাংসে প্রোটিন থাকে ২৫ গ্রাম।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শুধু মাংসই নয়, প্রোটিন সমৃদ্ধ অন্যান্য খাদ্যপণ্য কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ।
এদিকে দাম বাড়ার কারণে যারা ব্রয়লারের নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন তারাও আগের চেয়ে পরিমাণে কম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। যারা দুটো নিতেন তারা এখন সেই টাকায় একটা কিনছেন।
বাজার মনিটরিং বাড়ানোর দিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে ক্রেতারা বলেন, কেন হুট করে ১৪০-১৫০ টাকা কেজির মুরগি ২৫০টাকা হলো এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। কোনো কারসাজি থাকলে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একই এলাকার মুরগির বিক্রেতারা বলেন, আড়তে মুরগি নাই। আমরা কোথা থেকে আনবো? যার কাছে যা পাই সেগুলো নিয়ে আসি বেশি দাম দিয়ে। বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে। লস তো দেওয়া যাবে না।
এসময় এই মুরগি বিক্রেতা আরও বলেন, দুদিন আগেও পাকিস্তানি মুরগির কেজি ৩৫০ করে বিক্রি করেছি। আজকে (শুক্রবার) কেজিতে ১৫ টাকা বাড়ছে। আমরা ৩৯০ করে কেজি বিক্রি করছি। কেন বাড়ছে দাম কিছুই জানি না।
আসছে রমজানে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে আতঙ্ক আছে ব্যবসায়ীদের মনেও।
এমআই