গোলাম আজম খান, কক্সবাজার:
প্রান্তিক লবণচাষী ও মিল মালিকদের নিয়ে
"পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে লবণ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লবণ শিল্প উন্নয়নে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে সেমিনার।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে কক্সবাজার শহরের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
পদক্ষেপ মানবিক এর উদ্যোগে সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের আয়োজিত সেমিনারে প্রান্তিক চাষীদের নানা সুবিধা-অসুবিধা ও লবণ শিল্পে সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
উক্ত সেমিনারে আলোচনায় পরিবেশ সংরক্ষণ করে পলিথিন মুক্ত লবণ উৎপাদন ক্ষেত্রে এমন সমাধানসূত্র বের করার জোর পদক্ষেপ নেয়ার মত দেন। পলিথিনের বিকল্প হিসাবে "প্লাস্টিক ট্রে" মাধ্যমে গভীর সামুদ্রিক পানি দিয়ে বে-সী সল্ট অথাৎ সামুদ্রিক লবণ উৎপাদন করে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব৷ দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় লবণ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এমনই একটি উদ্যোগ নজর কাড়ার মতো৷
এছাড়া সেমিনারে মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কমে যাওয়া, চাষীদের কষ্ট, কিভাবে লবণ শিল্পে লাভবান হওয়া যাবে এবং চলতি মৌসুমে চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় আলোচনায় অংশ নেন, কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভুঁইয়া, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান, এনজিও পদক্ষেপের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব হাফিজুর রহমান বলেন, পদক্ষেপ লবণ শিল্প নিয়ে এই রকম একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সত্যিকার অর্থে লবণ শিল্প ও জাতীয় অর্থনীতিতে সহায়ক ভুমিকা রাখবে। লবণ চাষীদের স্বার্থে চলমান প্রক্রিয়ার টেকসই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পাশাপাশি প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনায় জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন পদক্ষেপ একটি সৃজনশীল প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যেখানে পরিবেশকে নিবিড়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে। এভাবে প্রত্যেক ক্ষেত্রে পরিবেশকে যুক্ত করলে আমাদের জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন নিশ্চিত হবে।
এনজিও পদক্ষেপের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল অর্থাৎ কক্সবাজার ও বাঁশখালীতে বিস্তৃত হয়ে আছে লবণ শিল্প। লবণ শিল্পের সাথে জড়িত সকল পেশাজীবী মানুষ এই শিল্পকে কেন্দ্র করে জীবন নির্বাহ করেন। লবণ শিল্প ও লবণ চাষীদের পাশে দাড়িয়ে এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র যেই প্রকল্প হাতে নিয়েছে এবং কার্যক্রম পরিচালনা করতেছে সেজন্য বিসিক'র পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানান।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে লবণ উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি ও লবণের মান সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সকল প্রয়োজনীয় সহায়তায় বিসিক সবসময় পাশে আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।
আলোচনায় পরিবেশ সংরক্ষণ করে পলিথিন মুক্ত লবণ উৎপাদনের প্রক্রিয়া চালু করতে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ‘প্লাস্টিক ট্রে’ ব্যবহার করে গভীর সমুদ্রের পানি দিয়ে বে-সী সল্ট (সামুদ্রিক লবণ) উৎপাদন করে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব বলে আলোচনা করা হয়।
কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, এই অঞ্চলের লবণ চাষী ও লবণ ব্যাবসায়ীদের মানোন্নয়নে বিসিক কাজ করে যাচ্ছে এবং লবণচাষীদের ভাগ্য উন্নয়নে বিসিক পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের যুগোপৎভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি লবণে মাইক্রো-প্লাস্টিকের উপস্থিতি কথা উল্লেখ করে বলেন, প্লাস্টিক মুক্ত লবণ উৎপাদনে চাষীদের উৎসাহি করতে পদক্ষেপ মানবিক মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃক পলিথিন বিহীন লবণ উৎপাদন ও সামুদ্রিক লবণ উৎপাদন প্রক্রিয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেন। পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃক পলিথিন রিসাইকেল প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে বলেন, এই প্রক্রিয়ায় একদিকে পরিবেশের ভারসাম্য যেমনি রক্ষা পাবে একইভাবে লবণচাষীরা ব্যবহৃত পলিথিন থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
এতে লবণ মিল মালিকসহ শতাধিক লবণ চাষী উপস্থিত ছিলেন।
এমআই