গোলাম আজম খান, কক্সবাজার:
অবৈধ বালু বাণিজ্যে ঘুষের চুক্তিকৃত টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে চকরিয়ার ডুলাহাজারা বাজারে বনকর্মী ও বালু ব্যবসায়ীর মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। ৮ এপ্রিল রাত পৌনে আটটায় ডুলাহাজারা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রধান সড়কে ডুলাহাজারা বনবিটের বনকর্মী নুর মোহাম্মদ ও বালু ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম সোনা মিয়ার মধ্যে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরক্ষণে ঘটনার সময় উপস্থিত ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তা অবনী কুমার রায় অবস্থা বেগতিক দেখে অবৈধ বালু বাণিজ্যের ঘুষের অবশিষ্ট টাকা না নিয়েই বনকর্মী নুর মোহাম্মদকে নিয়েই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, সম্প্রতি ডুলাহাজারা বগাচতর মৌজার ধ্বংসাবশেষ মানুষের জমিতে চাষাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এসময় সেখানে অভিযানে যায় মালুমঘাটস্থ ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কার্যালয়ের লোকজন। এদিন বিকেলে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মোবাইল কোর্টে পরিচালনা করে পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে আইনের আওতায় আনা হয়। এরপর থেকে সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও একই ইউনিয়নের বনবিভাগের পাগলিরবীল মৌজায় জব্দকৃত বালু ও পার্বত্য লামা উপজেলাধীন ফাঁসিয়াখালীর মালুম্যা ও বগাইছড়ি এলাকা থেকে অবৈধ বালু পাচার কিছুতেই বন্ধ হয়নি। কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সেখান থেকে বালু পাচার অব্যাহত রাখে।
অভিযোগ রয়েছে-স্থানীয় বনরক্ষীদের মাসিক চুক্তিতে ম্যানেজ করে পরিবেশ বিধ্বংসী এই কাজ দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে অসাধু বালু খেকো চক্র।
হাতাহাতির ঘটনায় বালু ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম সোনা মিয়া জানান, বালু মহাল থেকে প্রতিদিন চারটি ট্রাকে করে নিরবিচ্ছিন্ন বালি বের করতে ডুলাহাজারা বন বিটের সাথে মাসিক ৮০ হাজার টাকায় মৌখিক চুক্তি করি। কথামত বিগত দশদিন আগে চুক্তির আগাম ৫০ হাজার টাকা বিট কর্মকর্তা অবনী শংকর রায়ের উপস্থিতিতে বিটের ক্যাশিয়ার নুর মোহাম্মদকে প্রদান করি। কিন্তু ৮ এপ্রিল রাতে ডুলাহাজারা বাজারে এসে বিট কর্মকর্তা অবনী ও নুর মোহাম্মদ চুক্তির বাকী টাকা দাবী করে। চুক্তিতে চারটি ডাম্পার থাকলেও আমার বালু টেনেছে তিনটি ডাম্পার। একটির টাকা কম দিতে চাওয়ায় দু'জন মিলে আমাকে মারতে আসে। পরে এ নিয়ে আমার সাথে ক্যাশিয়ার নুর মোহাম্মদের হাতাহাতি হয়েছে। জাস্ট-এতটুকুই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল মান্নান জানান, রাতের আলো আঁধারীতে এরা কিছু একটা নিয়ে তর্ক করছিল। পরে দু'জন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। আমি দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে নিবৃত্ত করি।
এ ব্যাপারে জানতে- ডুলাহাজারা বন বিট কর্মকর্তা অবনী শংকর রায় ও বনরক্ষী নুর মোহাম্মদের মুঠোফোনে বেশ ক'বার ফোন দিই। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর পরে কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন।
এমআই