আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মঙ্গলবার আটক করেছে রেঞ্জার্স। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ভেতর থেকে তাকে আটক করা হয়। অবশ্য ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ দাবি করেছে, ইমরান খানকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের পর থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। আজ বুধবার তাকে রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী-সমর্থকেরা বিভিন্ন শহরে রাতভর বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়িতে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আগুন ধরিয়ে দেয়। সেনাবাহিনীর দফতরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পাঞ্জাবের মিয়ানওয়ালি বিমানঘাঁটিতে তাণ্ডব চালিয়েছে পিটিআই সমর্থকরা। এ সময় সেখানে থাকা পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি বিমানও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার দেশজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই।
ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর পাকিস্তানজুড়ে টুইটার, ফেসবুক এবং ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সীমিত করে দেওয়া হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সম্ভবত চার থেকে পাঁচ দিনের জন্য জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরোর (এনএবি) হেফাজতে থাকতে পারে। কারণ এনএবি আইন অনুযায়ী অনুমোদিত সর্বোচ্চ রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করেছে।
এনএবির একটি সূত্র মঙ্গলবার ডনকে জানিয়েছে যে, ইমরান খানকে বুধবার জবাবদিহি আদালতে পেশ করা হবে। ওই সূত্র জানিয়েছে, আমরা তাকে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৯৯-এর নতুন সংশোধনী অনুযায়ী যেকোন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত শারীরিক রিমান্ডের সময়কাল ৯০ দিন থেকে কমিয়ে ১৪ দিন করা হয়েছে।
ওই সূত্র ডনকে বলেছেন, 'আমরা আদালত থেকে সর্বোচ্চ ১৪ দিনের শারীরিক রিমান্ড চাইব। আদালত কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করবে বলে আশা করা হচ্ছে।'
এখন ইমরান খানকে কোথায় রাখা হয়েছে এ বিষয়ে সূত্রটি বলেছে যে, তাকে এনএবি এর রাওয়ালপিন্ডি/ইসলামাবাদ আঞ্চলিক সদর দফতরে 'আরামদায়ক পরিবেশে' রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইমরান খানের সঙ্গে 'কঠোর আচরণ' করা হবে না, বরং তাকে কেবল মামলায় তার কথিত জড়িত থাকার এবং আর্থিক সুবিধা চাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
একটি অফিসিয়াল বিবৃতিতে, ব্যুরো ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলার বিবরণও দিয়েছে।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৯ মে) বিকেলে ইরমান খানকে গ্রেফতারের পরপর বিক্ষোভ শুরু করেন পিটিআই কর্মীরা। সন্ধ্যার পর গোটা পাকিস্তানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পিটিআই কর্মীরা ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর, করাচি, গুজরানওয়ালা, ফয়সালাবাদ, মুলতান, পেশাওয়ার ও মারদানে বিক্ষোভ করে। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মী-সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডির সেনা দফতরে হামলা চালায়। এর আগে লাহোর সেনানিবাসের অফিসার্স কোয়ার্টারেও তারা হামলা চালায়। পাঞ্জাবে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
সূত্র: ডন
এমআই