সৌরভ শুভ, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্র ইউনিয়ন নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রক্টর ও ২১নং হল প্রভোস্টের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ।
গতকাল রবিবার (১১ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
লিখিত বক্তব্যে গত ৮ জুন দু'টি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে 'এক হলেই ৪০ টি আসন চাইলেন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরের বক্তব্য সম্পুর্ন মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বামপন্থী গোষ্ঠীর গণরুমবিরোধী অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা বলে দাবী করেন নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ঘোষিত নতুন হলে আটটি হল থেকে এক হাজার সিটের মধ্যে শুরুতে আট'শ সিটের বরাদ্দ হয়। প্রথমে মীর মশাররফ হোসেন হলে নোটিশ সহকারে (ভুলবশত) ২০০ টি আবেদন গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে যখন জানা যায়, ১০০ টির বেশি সিট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না, তখন বাকি ১০০ জন একরকম বিপদের মধ্যেই পড়েন।
এদের মধ্য ২৭ জন শিক্ষার্থী তাদের জরুরি পরিস্থিতির কথা ছাত্র ইউনিয়ন, জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায়কে জানান। এ উদ্দেশ্যে ২১ জন সহকারে অমর্ত্য রায় ভাইস চ্যান্সেলরের নিকট জানুয়ারির ১৯ তারিখ উপাচার্য অফিসে উপস্থিত হয়ে আবেদন জানান। ভাইস চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নতুন হলের প্রভোস্টকে এই সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মুহুর্তেই ২৯ জনকে সিট দেয়া সম্ভব না, এবং খুব এমার্জেন্সি পরিস্থিতি যাদের, তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। সেই পরিস্থিতিতে ১৭ জন শিক্ষার্থীকে সিটের ব্যবস্থা করা হয়। নতুন হলে শিক্ষার্থীদের আসন পাওয়ার নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সংগঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৫ই মার্চ গণরুম বিলুপ্তির দাবিতে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের অবরোধে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের বক্তব্যে নতুন হলে ২০০ টি সিট ফাঁকা রাখার আলাপ এলে আন্দোলনকারীদের আশংকা তৈরি হয় নতুন হল সমূহেও রাজনৈতিক ব্লক তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাহায্য করছে কিনা। এমন আশংকা প্রকাশ করা হলে প্রক্টর ছাত্র ইউনিয়নের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং আন্দোলনকারীদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করতে এমন মন্তব্য প্রদান করেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, "২১ নং হল প্রভোস্ট ড. তাজউদ্দীন শিকদারের মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। ২৯ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকেই নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্ব স্ব অ্যালোটেড হলে আবেদন করেছেন এবং নায্য সিট হতে বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যারা গণরুম-মিনি গণরুম সংকটের কারণে হলে অবস্থান করতে পারে না, এমন ২৯ জন শিক্ষার্থীর অনুরোধে প্রেক্ষিতে প্রক্টরের মাধ্যমে নয়, বরং সরাসরি ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে এসব শিক্ষার্থীর আবাসনের জন্য অ্যাডভোকেসি করা হয়, যা ক্যাম্পাস ছাত্র ইউনিয়নের দায়িত্বের অন্তর্ভূক্ত৷
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের অবস্থান সবসময়ই প্রশাসনের বিপক্ষে। ছাত্র ইউনিয়নের ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন দাবি করা হয়েছে। আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নের অবস্থানকে সংকটাপন্ন করতে প্রক্টর জনসম্মুখে এমন কথা বলেছেন। প্রশাসনের সাথে তাদের কোন প্রকার দরকষাকষি বা লেজুড়বৃত্তি নেই বলে দাবি করেন তারা৷
সময় জার্নাল/এলআর