আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডার একটি আবাসিক মাধ্যমিক স্কুলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। আহতদের মধ্যে আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের সবাইকে নিকটবর্তী ‘বেওয়ারা’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে উগান্ডার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এমপন্ডওয়েতে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশী কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (ডিআরসি) সীমান্ত থেকে শহরটি মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এদিকে, এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে কতজন শিক্ষার্থী ছিল, তা জানায়নি পুলিশ।
জানা যায়, হামলাকারীরা স্কুল চত্বরে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা স্কুলটির ছাত্রাবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। লুট করে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রাখা সব খাদ্যসামগ্রী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাড়া করলে হামলাকারীরা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের দিকে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দাবি, কঙ্গোভিত্তিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অ্যালাইড ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এডিফ) উগান্ডা শাখা এ হামলার জন্য দায়ী। গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এডিএফের বিরুদ্ধে ডাকাতি, মানবপাচার, হত্যা ও মাদক বাণিজ্যে সংশ্লিষ্টতার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
এডিএফের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় তারা। চলতি বছরের এপ্রিলে পূর্ব ডিআরসিতে একটি হামলার জন্য গোষ্ঠীটিকে দায়ী করা হয়েছিল যাতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছিল। পরের মাসে পূর্ব ডিআরসির মুকন্দি গ্রামে রাতের হামলার ৩৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পেছনেও এ দল দায়ী বলে মনে করা হয়।
উগান্ডা কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালে রাজধানী কাম্পালায় মারাত্মক আত্মঘাতী বোমা হামলার জন্য এডিএফকে দায়ী করেছে। ওই বছরে উগান্ডা এডিএফের বিরুদ্ধে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে যৌথ বিমান ও আর্টিলারি হামলা শুরু করে। সম্প্রতি দেশটি দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে থাকা এডিএফ সদস্যদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
১৯৯৫ সালে মুসেভেনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উগান্ডা মুসলিম লিবারেশন আর্মি ও ন্যাশনাল আর্মি ফর দ্য লিবারেশন অব উগান্ডাসহ (এনএএলইউ) বিদ্রোহী বাহিনীর একটি জোটের মাধ্যমে এডিএফ গঠিত হয়েছিল। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এডিএফকে ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে। খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ পূর্ব ডিআরসিতে বিচরণকারী কয়েক ডজন সশস্ত্র মিলিশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক বলেও মনে করা হয় এ গোষ্ঠাকে।
সময় জার্নাল/এলআর