আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়া দেশটির ভাড়াটে যোদ্ধার দল ওয়াগনার গ্রুপ আকস্মিক পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ‘রক্তপাত এড়াতে’ সিদ্ধান্ত বদলে তারা নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে ।
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনার দল ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন নিজের টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, রক্তপাত এড়াতেই মস্কো দখলের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। তবে বিবিসি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বেলারুসের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা হয় ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিনের। তার পরেই প্রিগোঝিন মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়া সেনাদের ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোঝিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়।
এর আগে, ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোঝিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা।
তিনি একটি অডিওবার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, গোটা দেশের তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রায় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরও ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু তার পরেই আচমকা বন্ধ অভিযান।
ট্যাংক ও সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা মস্কো দখলের অভিযানে নেমেছিল বলে পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমের দাবি। তাদের রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছিল। এমনকি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতকেরা সমুচিত জবাব পাবে। প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন তিনি।
রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রধান চার্লস মাইকেল টুইটারে লিখেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
অপর দিকে সব পক্ষকে দায়িত্বশীল থাকার ও বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। রাশিয়া পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বলে জানিয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, নরওয়ে ও বেলজিয়াম।
সময় জার্নাল/এলআর