নিজস্ব প্রতিনিধি:
গতবছর কেউবা দুইভাগ কোরবানি দিয়েছিলেন। এবার এক ভাগও দিতে পারবেন কিনা বুঝতে পারছেন না। অনেকেই বলছেন এবছর হয়ত কোরবানিই দেয়া হবে না। হাটে লাখ টাকার নিচে গরু নেই।রাজধানীর কোরবানির পশুরহাটে প্রচুর গরু এসেছে। এর বেশির ভাগই দেশীয় গরু যা পরিকল্পিত উপায়ে মোটাতাজা করা। গরু দেখতেও সুন্দর। কিন্তু দাম চড়া।
বেশির ভাগ মাঝারি গরুর দাম দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে। এর চেয়েও বেশি দামের গরু আছে। দাম ছয় লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকার মধ্যে। ফলে কোরবানির পশুরহাটে মধ্যবিত্ত ক্রেতারা হাপিত্তেশ করছেন। লাখ টাকা দামের ছোট গরু কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
কমলাপুরে গরু কিনতে এসে অসহায়ের মতো ঘুরছিলেন আরামবাগের মহসিন। বাজারের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত তিনি। জানালেন, বাজেটের চেয়ে দামের বিস্তর ফারাকের কথা। একজন সাধারণ চাকরিজীবী মহসিন। বেতন-বোনাসের টাকার মধ্যেই কোরবানির পশু কেনার বাজেট করতে হয়। এবার আর সেই বাজেটে কুলোচ্ছে না।
গতবারের চেয়ে অনেক বেড়েছে পশুর দাম। মহসিন জানান, এবার একটা ছোট গরুর দামও চাওয়া হচ্ছে এক লাখ টাকা। যাতে তিন মণ গোশত হবে। সে হিসেবে প্রতি কেজির দাম পড়বে প্রায় এক হাজার টাকা।
একই অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন শান্তি নগরের জাফর আহমদ। তিনি জানালেন মোটামুটি পছন্দের একটা গরু কিনতে হলেও লাখ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে। তার ভাষ্য, গত বছর যে গুরুর দাম ছিল ৮০ হাজার টাকা, এবার তার দাম এক লাখের বেশি। আর দরদাম করেও লাভ হচ্ছে না। বিক্রেতা যা চাইছেন তা থেকে সরছেন না। এতে করে এবার গরু কেনা দায় হয়ে গেছে।
অন্য দিকে এবার কোরবানির পশুর দাম অতিরিক্ত স্বীকার করে বিক্রেতারা বলছেন, গরুর খাদ্যের দামসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। ফলে তারা চাইলেও কম দামে পশু বিক্রি করতে পারছেন না।
বাসাবো কদমতলায় একটি ফর্মেসি দিয়েছেন হারুন অর রশীদ। আগে কয়েক ভাই মিলে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। কিন্তু নানা কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন তিনি। হারুন জানান, আগে এক সময় গরু কোরবানি দিলেও এবার দিতে পারছেন না।
বড়ো গরুর চেয়ে ছোট গরুর চাহিদা বেশি জানিয়ে পাইকাররা জানান, মধ্যবিত্তের মধ্যে বেশির ভাগের পছন্দ ছোট গরু। কিন্তু এবার দাম বেশি হওয়াতে অনেকে গরু না কিনে বাজেট সঙ্কুুলানে খাসি কিনছেন। আবার অনেকে আগে একটি গরু দিলেও এবার ভাগে কুরবানি দিচ্ছেন। আবার অনেকে সাংসারিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাজেট কমিয়েছেন।
সময় জার্নাল/এলআর