সর্বশেষ সংবাদ
শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি: শহর থেকে মফস্বল সর্বত্রই যখন আসন্ন ঈদুল আজহা নিয়ে সরগরম, পরিবার-বন্ধুমহল যখন ব্যস্ত গরুর হাট নিয়ে তখন পেশাদার দায়িত্ব পালনে একদল মানুষের ঈদ কাটবে একা, চিরচেনা আবাসের বাইরে ফাঁকা ক্যাম্পাসে। গত ২৫ জুন থেকে মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তাদের ছুটি হয়নি। বলছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের। কারো কাছে মামা, কারো কাছে ভাই আবার কারো কাছে আঙ্কেল সম্বোধন পাওয়া এই মানুষগুলো দায়িত্ব পালন করে চলেছেন সর্বক্ষণ। ঈদে ক্যাম্পাস শূন্য হয়ে গেলেও দায়িত্ব কমে না তাদের। শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তারা পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বাড়িতে অবস্থান করলেও ক্যাম্পাসটাকে আগলে রাখার জন্য বদ্ধপরিকর থাকেন তারা। শূন্য দৃষ্টিতে ছুটি কাটাতে পরিচিত মুখগুলোর চলে যাওয়া দেখছেন, বিদায় দিচ্ছেন হাসিমুখে। পরিবারের বাইরে কর্মস্থলে এভাবেই ঈদ কাটাবেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিরাপত্তা কর্মীদের ২২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এবং ২৯ জনের আনসার সদস্যদের দল আউটসোর্সিংয়ে দায়িত্ব পালন করছে। এরমধ্যে ঈদের ছুটি পেয়েছেন মাত্র ৪ জন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন সদস্যের কেউ ঈদ উপলক্ষে কোন ছুটি পায়নি। নিয়ম মাফিক সপ্তাহে একদিনের ছুটি ভোগ করবে। যারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন তারা হয়তো পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে না কিন্তু সহকর্মীদের সাথেই ঈদ তাদের। এ এক অন্যরকম ঈদ। এক ঈদে যারা বাড়ি ফিরবে অন্য ঈদে তারা থাকবে কর্মস্থলে৷ এ নিয়ে তাদের আফসোস হলেও অন্য সহকর্মীরা যে পরিবারের সাথে ঈদ পালন করতে পারছে এতেই তাদের আনন্দ। এমনি একজন দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ' বিগত১৪ বছর যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পেশায় নিয়োজিত আছি। এই পেশায় আসার পর দায়িত্বশীল জায়গা থেকেই প্রতিবছর একটা ঈদ পরিবার ছাড়া একা এখানে কাটানো লাগে। এই ত্যাগ দায়িত্বের জন্য, পরিবারের জন্য। ঈদ আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি না করতে পারলেও সহকর্মীদের সঙ্গে কাটবে এটুকুও আনন্দের।' সদ্য নিয়োজিত আরও একজন আনসার সদস্য অহিদুল ইসলাম বলেন, ' এই পেশায় নিযুক্ত হয়েছি ৮ মাস যাবত, তবে পরিবার ব্যতীত এটাই আমার প্রথম ঈদ না। বছরের প্রথম ঈদ (ঈদ-উল-ফিতুর) ও একাই কাটাতে হয়েছে। ' দুটো ঈদের মধ্যে একটি ছুটিতে কাটানোর নিয়ম থাকাতেও পরপর দুটো ঈদ কেন এভাবে কাটাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ' ঈদের কিছুদিন আগেই আমাকে ছুটি কাটাতে হয়েছিলো মাস্টার্স এর ভাইবা পরীক্ষার জন্য। তাই ঈদে ছুটি মিলে নি। কর্মজীবনের প্রথম বছরের দুটো ঈদ একা কাটানোর অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, 'ঈদ সকলের জন্য আনন্দ বয়ে আনে। সকলের আশা থাকে পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ কাটানোর, তবে কখনও কখনও জীবনের তাগিদে নানা প্রয়োজনে সে আনন্দ ভাগ করার সুযোগ থাকে না। আমরা যারা নিরাপত্তা সেক্টরে কাজ করি, আমাদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বেশ সচেতন থাকতে হয়। তাই কাজে দায়িত্ব অবহেলার সুযোগ নেই সে ঈদ কিংবা অন্য প্রয়োজনে হোক।' এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার জানান, ' ঈদ উপলক্ষে বন্ধ থাকলেও সবাইকে ছুটি দেওয়া সম্ভব না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা স্বার্থে এ সময় গুলোতে আরও বেশি সচেতন থাকতে হয়। তাই অল্প কজনই ছুটি পেয়েছেন। বাকিদের এই ছুটি পরবর্তী সময়ে সমন্বয় করে দেওয়া হবে।' ঈদ উপলক্ষে নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোন আয়োজন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ' বড় পরিসরে তেমন আয়োজন নেই, তবে ঈদের দিন তাদের জন্য বিশেষ খাবারের আয়োজন থাকবে।' সময় জার্নাল/এস.এম
এ বিভাগের আরো
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল