শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৬ তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না মানায় পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিভাগেই প্লানিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বলছেন ৮৬ তম সিন্ডিকেটের আগের ঘটনা হওয়ায় আগের নিয়মেই কাজ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো: আমিররুল হক চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
কারন দর্শানোর চিঠিতে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৮৬তম সভায় শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ীর আবেদন বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির মাধ্যমে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগ সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আলোকে শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ীর আবেদন বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির মাধ্যমে প্রেরণ করেছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধন আইন-২০১৩ এর ১০ (০৮) (খ) এ প্ল্যানিং কমিটি 'শিক্ষক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশ করবেন' মর্মে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও পরিসংখ্যান বিভাগের বিদ্যমান প্ল্যানিং কমিটি' পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষকদের 'চাকুরি স্থায়ীর আবেদন প্ল্যানিং করার সুযোগ নেই' মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যা পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও প্ল্যানিং কমিটির সভাপতি হিসেবে গত ২০ মার্চ পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন। যেহেতু, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অমান্য করার উপরোক্ত আচরণ সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা পরিপন্থী যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) মোতাবেক অসদাচরণ হিসেবে গণ্য।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, সেকারণে আপনাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) এর দায়ে অভিযুক্ত করে কেন উক্ত বিধিমালার অধীনে যথোপযুক্ত দন্ড প্রদান করা হবে না তা নোটিশ প্রাপ্তির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো।
এ ব্যাপারে পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিভাগীয় প্লানিং কমিটির অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, ' আমি এ ধরনের চিঠিতে মর্মাহত বোধ করছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ছিলাম, সিন্ডিকেট মেম্বার ছিলাম, তিনবার বিভাগীয় সভাপতি। এই আইন ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬ তম সিন্ডিকেটে পাশ হয়েছে। আর আবেদন জানুয়ারির ৯ তারিখ। এখন যদি এই কারনে শোকজ করতে হয় তাহলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সব নিয়োগ আবার প্লানিং করে পাঠাতে হবে।
এই বিষয়ে জানতে বিভাগীয় প্লানিং কমিটি রেজিস্ট্রারকে চার-পাঁচবার ফোন করেছিল। তিনি ফোন ধরেননি। বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি কিন্তু কোন উত্তর আসেনি। তখন আমরা আইনে দেখলাম, বিভাগীয় প্লানিং কমিটি শুধুমাত্র নিয়োগ অর্থাৎ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিয়োগে সুপারিশ করবেন। এটা আমাদের ধারণা করেছিলাম। কিন্তু এই বাখ্যা তো রেজিস্ট্রার দিতে পারতো। পরবর্তীতে সিন্ডিকেট ছিল। সিন্ডিকেটের পর আমি ওনার কাছে আসলাম। ওনাকে জিজ্ঞাস করলাম তারিখের বিষয়ে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আগের বিষয় তো আমরা প্লানিং করে পাঠাতে পারি না।'
তিনি আরো বলেন, 'আমাদের বিভাগে গতকাল প্লানিং ছিল। সেগুলো ৮৬ তম সিন্ডিকেটের পাশ হওয়া আইন অনুযায়ীই করেছি। আমরা সেটা করতে বাধ্য।'
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আগে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে বিভাগীয় প্লানিংয়ের সুপারিশ ছাড়া কিছু স্থায়িকরনের আবেদনএসেছিল। পরে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর বিভাগীয় সুপারিশ নিয়ে পাঠাতে বললে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন ওনাকে শোকচ করা হয়। তবে এরপরের প্লানিংগুলো নিয়ম মেনেই বিভাগ থেকে পেয়েছি।'
সময় জার্নাল/এলআর