ডাঃ আহমেদ জোবায়ের :
খবরে প্রকাশ বাবুল আখতারই তার স্ত্রী মিতুকে হত্যা করেছেন পিবিআই এর তদন্তে এমন উঠে এসেছে।
ইতিমধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুরো গল্পটা চিন্তা করলে যেকোনো মানুষ শিউরে উঠবেন।
স্ত্রীর পাশে শুয়েই নিজ সন্তানদের মাকে খুনের পরিকল্পনা ভাবা যায়?
সন্তানের সামনেই নিজের সোর্সকে দিয়ে তিনলাখ টাকা চুক্তিতে বাবুল আখতার তার স্ত্রীকে খুন করেন।
তারপর স্ত্রী শোকে মুহ্যমান বাবুল আখতারের কান্না আমাদেরও কাঁদিয়েছিলো আজ থেকে ৫ বছর আগে।
অডিও ক্লিপ থাকার জন্যই বাবুল আখতার ফেঁসে গেলেন তদন্তে এমন বলা হয়েছে।
এমন ঘটনা সত্যি ঘটে থাকলে বাবুল আখতারের কঠিন শাস্তি প্রাপ্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ফেবু জাস্টিসরা রায় দেওয়া শুরু করেছেন।
বড়ই অস্থির সবাই।
যতটুকুন জানা যায় বাবুল আখতার একজন প্রখর মেধাবী পুলিশ অফিসার ছিলেন।
সে পিপিএম বিপিএম পদক কয়েকবার করে পেয়েছেন।
নিজেও ছিলেন ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চে।
তার দক্ষতা নিয়ে তখন কেউ প্রশ্ন করেনি।
তিনি স্ত্রীর হত্যার পর বাচ্চাদের নিয়ে শ্বশুরের বাসায় ছিলেন।
সবকিছু গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করলে আমার ঠিক হজম হচ্ছেনা পুরো গল্পটা।
আমি তব্দা খেয়ে বসে আছি।
একজন বাবা কিভাবে তার সন্তানের সামনে তার স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করতে পারেন?
একজন দক্ষ পুলিশ কিভাবে নিজের সোর্স ও পরিচিত মানুষকে দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করাতে পারেন?
যে নিজে শতশত মামলা তদন্ত করেছে,তার কি ধরা পড়ার ভয় ছিলোনা?
এমন কাঁচা প্লটে কেউ স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়ে খুন করতে গেলো কেন?
একজন এসপি হিসেবে তার পাওয়ার ছিলো। সেই পাওয়ার খাটিয়ে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে মীমাংসা না করে খুন করার উদ্দেশ্য কি হতে পারে?
খুন করার পর পরই কেউ খুনীকে ফোন দিয়ে বলে কোপালি কেন?
সে কি জানতোনা পুলিশ হিসেবে এই অডিও রেকর্ড বের করা যাবে?
খুনের পরপর দুইজনকে ক্রসফায়ার দেওয়া হলো তখন।
দুইজনকে গুম করে দেওয়া হলো।
অনেককে এরেস্ট করে রিমান্ডে নেওয়া হলো।
এই মামলায় আবার তদন্ত করতে ৫ বছর লাগলো।
মামলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া অডিও রেকর্ড পেতে এতদিন লাগছে??
যাদের সেদিন ক্রসফায়ারে হত্যা করা হলো, তাদের সাথে কি ন্যায়বিচার করা হলো?
এমন রহস্য উদঘাটনে সক্ষম পুলিশ সাগর রুনি হত্যার কুলকিনারা করতে পেরেছেন আজও?
তনুকে কে হত্যা করলো নাকি ভাল্লুকে মেরে ফেলে গিয়েছে?
জজ মিয়া নাটক কোন দেশে মঞ্চস্থ হয়েছিলো জানা আছে আপনাদের?
পুলিশের সব তদন্তই কি বেদবাক্য ও বিশ্বাসযোগ্য?
পুলিশতো কিছুদিন আগে তদন্ত করে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছিলো সে হাজী সেলিম পুত্র নিষ্পাপ ও মাসুম।
র্যাবের মামলা খারিজ হয়ে গেলো।
পুলিশের অনেক তদন্ত রিপোর্ট ও চার্জশীট আদালতে খারিজ হয়ে যায়,গ্রহণ করা হয়না।
অনেক নিরাপরাধ মানুষ নানাবিধ কারণে পুলিশের চার্জশীটে ঢুকে যায় অনায়াসে এইদেশে।
পুলিশ অনেক মানুষকে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত করলেও আদালতে তারা নির্দোষ প্রমাণ হয়ে মুক্তি পান।
বাবুল আখতার কি ভিক্টিম হবার কোন সুযোগ আছে?
ঘটনার পর এমন শুনা গেছে হয় চাকুরী ছাড় নতুবা স্ত্রী হত্যার দায় নাও?
আপনারা শুনেননি।
খুন করার পর বাবুল আখতার ৫ বছর দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
অথচ নিরাপদে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সুযোগ কি তার ছিলো না।
সে তো জানতো সে এই খুনের মাস্টারমাইন্ড।
আমি অনেকের লেখা পড়েছি। সবকিছু দেখছি।
পুরো ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো রহস্যময়।
আজকাল কোন কিছুতেই বিশ্বাস করে উঠতে পারিনা।
যদিও বরগুনার রিফাত হত্যাকান্ডে মিন্নিকে আমরা অনেকে বিশ্বাস করে ঠকেছি।
তবে শুরুতেই মিন্নি দোষী এমনটা অনেকেই তখন বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন।
আমি শুধু মিতু হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
তার সন্তানদের মারা হারা করার বিচার চাই।
আমি আদালতের বিচার বিশ্লেষণ ও রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই।
বাংলাদেশের পুলিশের সব কথাই আমি বিশ্বাস করার মত অবস্থায় নেই।
বাবুল আখতার দোষী প্রমাণিত হলে তার শাস্তি অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই চাই।
তবে নিরাপরাধ কেউ বলির পাঠা না হউক তাও চাই।