নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বড় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০১৮ সালে প্রণীত আইনটির কয়েকটি ধারা বহাল রেখে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে প্রতিস্থাপিত হবে।
সোমবার (৭ আগস্ট) দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।
মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন, সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আধুনিকীকরণ এবং এর অপব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একইসঙ্গে আমরা এই আইনের সংস্কার করে এর নাম বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছি। আমরা একইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের সংস্কার করব।'
আইনে কী পরিবর্তন আসবে সেটা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই আইনের বহু ধারা নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে।
একটি বড় পরিবর্তনের কথা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির অভিযোগ কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান ছিল। নতুন আইনে সেখানে পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান করা হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, যখন নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন হবে, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর থাকবে না।
সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে নতুন আইনটি পাস হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে সংসদ অধিবেশন বসবে। সেখানে এটি উপস্থাপন করা হবে। তখন এটি পাস হবে।
আইন পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে আনিসুল হক বলেন, আমরা আলোচনা করে দেখেছি জনগণের এবং যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে সেটা ভালোভাবে করা যাবে, সে কারণে এই আইনের পরিবর্তন করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অবশ্যই আইনটি পরিবর্তনের ফলে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ হবে।
২০১৮ সালে প্রণীত বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। বিশেষ করে এর ৫৭ ধারা দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা, সর্বোপরি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬-সহ মোট পাঁচচটি ধারা বিলুপ্ত করে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ পাস হয়। আইনটি কার্যকরের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর এর অপপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। সাংবাদিক নেতারা বরাবরই আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।
এমআই