নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন-২০২৩ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সরকার। পুরনো আইনের কিছু ধারা সংযোজন করে আগামী সেপ্টেম্বরে নতুন আইনটি পাস হওয়ার কথা রয়েছে। আইনটিতে মানহানির মামলায় সাংবাদিকদের কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানার কথা উল্লেখ থাকবে।
সোমবার (৭ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বহুল আলোচিত আইনটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নতুন আইনটির নানা দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী ‘২৯ ধারা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। শুধু শাস্তি হবে জরিমানা, সেই জরিমানা অনাদায়ে তিন থেকে ছয় মাসের কারাদণ্ড থাকবে। সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু সাজা রাখা হয়েছে। দেওয়ানি আইনে যদি মানুষ ক্ষতিপূরণ চায় সেখানে কিন্তু ক্ষতিপূরণের কোনো লিমিট নেই। ১০০ কোটি টাকাও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। সেইসব ক্যালকুলেশনে অনধিক ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। সর্বনিম্ন যেকোনো পরিমাণ জরিমানা করা যাবে। এক টাকাও জরিমানা করা যাবে, কিন্তু ২৫ লাখ এক টাকা জরিমানা করা যাবে না।’
আনিসুল হক বলেন, ‘সাইবার অপরাধ আইন চালু হলে ডিজিটাল সিকিউরিটি বা নিরাপত্তা আইন বাতিল হয়ে যাবে। বর্তমানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে সমস্ত মামলা চলমান রয়েছে তা চলতে থাকবে এবং পরবর্তী সময়ে সাইবার অপরাধ আইনে সে মামলা চলবে।’
আইনটি পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে আনিসুল হক বলেন, আমরা আলোচনা করে দেখেছি জনগণের এবং যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে সেটা ভালোভাবে করা যাবে, সে কারণে এই আইনের পরিবর্তন করা হয়েছে।
২০১৮ সালে প্রণীত বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। বিশেষ করে এর ৫৭ ধারা দেশে-বিদেশে সমালোচিত হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা, সর্বোপরি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬-সহ মোট পাঁচচটি ধারা বিলুপ্ত করে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ পাস হয়। আইনটি কার্যকরের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর এর অপপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। সাংবাদিক নেতারা বরাবরই আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেন তারা।
এমআই