সৌরভ শুভ, জাবি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মরত ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আসিফ আল মামুনের উপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অতর্কিত হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
সোমবার (২১ আগস্ট) এক যৌথ বিবৃতিতে জাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি শিহাব উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিব সোহেল সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি জানান। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক সংগঠগুলো।
জানা যায়, রবিবার (২০ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অতিথি কক্ষে শাখা ছাত্রলীগের ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ ব্যাচের কর্মীদের 'পলিটিকাল গেস্টরুম' চলাকালীন বাইরে থেকে ভিডিও ধারণ করছে সন্দেহে এক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ধাওয়া করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এসময় হলের অভ্যন্তরের দোকানে অবস্থানরত সাংবাদিক আসিফ আল মামুন উচ্চশব্দ শুনে হল মাঠের দিকে এগিয়ে গেলে ছাত্রলীগ কর্মী ও ৪৮ ব্যাচের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মো. নাঈম হোসেন ও একই বিভাগের আমিনুর রহমান সুমন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের হৃদয় রায়, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের শাফায়েত হোসেন তোহা এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ও ৪৭ ব্যাচের চারুকলা বিভাগের মেহেদী হাসানসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জন তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। মারধরের সময় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা আরেক দফায় আসিফকে মারধর করে।
এসময় শাখা ছাত্রলীগের উপ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সারোয়ার শাকিল, উপ-মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক জাহিদ হাসান, সহসম্পাদক রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান, ক্রীড়া বিষয়ক উপসম্পাদক ফয়জুল ইসলাম নিরব, ৪৭ ব্যাচের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের সৌরভ পাল, পরিসংখ্যান বিভাগের মীর তাওহীদুল ইসলাম, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আলী আক্কাস আলী, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মাহীদ ও সীমান্ত মারধরে প্রত্যক্ষ মদদ দেয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত এক বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের উপর বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রতিবারই হামলার ঘটনার সাথে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছে। এ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রতিবারই কর্মীদের শুধরে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার বাস্তবায়ন বিন্দুমাত্র পরিলক্ষিত হয়নি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মত মুক্তচিন্তার জায়গায় এমন হয়রানিমূলক ঘটনার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। কোন ঘটনা ঘটলে তার সংবাদ পরিবেশনের জন্য জানতে চাওয়া ও খোঁজ নেয়া সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অতর্কিত হামলার ঘটনা ন্যাক্কারজনক ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানান।
এমআই