আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোশিন প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। বিধ্বস্ত প্লেন থেকে উদ্ধার করা ১০টি মরদেহের জেনেটিক বিশ্লেষণ করে রোববার (২৭ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মস্কো।
তদন্তকারী দল জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত ১০টি মরদেহের সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ২৫ আগস্ট মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে প্রিগোজিনকে বহনকারী প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়। তিন ক্রু, প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ মোট ১০ জন ওই প্লেনটিতে ছিলেন। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই সবার মৃত্যু হয়। এমনকি যারা নিহত হন তাদের দেহ বিকৃত হয়ে যায়। ফলে পরবর্তীতে মরদেহগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হতে জেনেটিক বিশ্লেষণ করা হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, যে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটির যাত্রীর তালিকায় প্রিগোজিনের নাম ছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারা তার মৃত্যুর বিষয়ে সরাসরি কোনো ঘোষণা দেয়নি।
প্লেন দুর্ঘটনার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায় ২৪ ঘণ্টা এ বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলেননি। তবে একদিন পর নিরবতা ভেঙে তিনি প্রিগোজিন ও প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত অন্যান্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। ওই সময় পুতিন বলেন, প্রিগোজিন একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু তিনি অনেক ভুলও করেছেন।
প্রিগোজিনকে বহনকারী প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর অনেকেই এই দুর্ঘটনার জন্য অভিযোগের তীর ছোড়েন প্রেসিডেন্ট পুতিনের দিকে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রিগোজিনকে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যারা এসব কথা বলছে সেগুলো সব ‘মিথ্যা।’
অবশ্য ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের প্রতি প্রেসিডেন্ট পুতিনের ক্ষোভ ছিল। কারণ মৃত্যুর মাত্র দুই মাস আগে তিনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নিজের ২৫ হাজার সেনা নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন। ওই বিদ্রোহে রুশ বাহিনীর একের অধিক বিমান ভূপাতিত করেছিল ওয়াগনার সেনারা। আর এসব কারণে প্রিগোজিনের ওপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন পুতিন। ফলে যখন প্রিগোজিনের প্লেনটি বিধ্বস্ত হয় তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য পশ্চিমা নেতারা দাবি করেন ‘বিদ্রোহের প্রতিশোধ নিতে প্রিগোজিনকে হত্যা করেছেন পুতিন।’
এমআই