নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমার ছাত্রলীগের ছেলে-মেয়েরা হবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের কর্ণধার। আপনাদের কাছে থেকে এটা আমার আশা। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একই রকম থাকবে না। আমি ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করেছি। তাই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে কেউ আর বাধা দিতে পারবে না। ছাত্রলীগকে প্রহরীর মতো জেগে থাকতে হবে।’
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সদস্য এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ হওয়া অন্যান্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এবং ছাত্রলীগের মূলনীতি-শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি অনুসরণ করতে বলেন।
ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যেখানে পড়ো সেটা পরিষ্কার রাখবা। নিজের বাড়িতে কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যাদের জমি অনাবাদি, তাদের উৎসাহিত করবে যেন ফসল করে। বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিডের ধকল বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল। এ সময়ে প্রত্যেকে উৎপাদনে দৃষ্টি দিলে কারও কাছে হাত পাততে হবে না।
নিজ এলাকায় পেনশন স্কিম নিয়ে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনকের এগিয়ে আনা বাংলাদেশকে তার হত্যার মধ্যদিয়ে আবার পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এসে আবার সে যায়গা থেকে বাংলাদেশকে তুলে এনেছি। স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ না হয়। স্বাধীনতা সুফল যাতে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়, সে ব্যবস্থা আমরা নিই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য, এ বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করবো। কবির ভাষায়, ‘এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।’ আমার কোনো ভয় নেই। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় কেউ যাতে নস্যাৎ করতে না পারে, তোমাদের (ছাত্রলীগ) অতন্দ্র প্রহরীর মতো ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি তোমাদের বলবো, শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি, ছাত্রলীগের মূলনীতি।
বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব। সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।’ আমি আশা করি, ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলবে।
বিএনপির আমলের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপি এসে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিল। ওরা ভোট করতে আসে না। ভোট পায় না। ওরা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস করে। মানুষের ঘরবাড়ি কেড়ে নেয়। লুটেরা সন্ত্রাসে বিশ্বাসী, এরা মানুষের কল্যাণে বিশ্বাস করে না।
২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা করে আমাদের ২৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। ভোট তাদের কথা না। তারা বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়। বিএনপি এদেশের কল্যাণ চাইতে পারে না, চায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, নিজের বা আমার ছেলে-মেয়েদের না। তাদের একটাই দিয়েছি, শিক্ষা। লোন নিয়ে তারা পড়েছে। ধন-সম্পদ টাকাকড়ি কোনো কিছু কাজে লাগে না। করোনায় সবাই বুঝতে পেরেছে।
আমি চাই, আমাদের ছেলে-মেয়েরা উপযুক্ত ও যোগ্য হয়ে গড়ে উঠবে। তারা অত্যন্ত মেধাবী। তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়া চীন এবং সিক্রেট ডকুমেন্টস বইগুলো পড়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, এসব বই থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতারা অংশ নেন।
সময় জার্নাল/এলআর