বুধবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
মো. কামরুল হুসাইন
প্রাচীন কালের বঙ্গ,বাঙ্গালা থেকে বর্তমান কালের বাংলাদেশ, রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। এই ইতিহাস লড়াই সংগ্রামের, যারাই এই ভূখণ্ডের অধিকর্তা হয়েছেন অধিকাংশই স্থায়ীভাবে থাকার উদ্দেশ্য আসে নাই,কেউ নতুন ভূখণ্ড করায়ত্ত কিংবা ধন সম্পদের প্রাচুর্যতাসহ আরও বিবিধ। প্রায় সকলেই এই ভূমিকে যথেচ্ছা ব্যবহার করেছেন, নিজের জন্মভূমি কিংবা পূর্বপুরুষের ভূমিকে স্বয়ংসম্পূর্ণতা দিয়েছেন। বিনিময়ে লুটতরাজ ও নির্মমতার বিপর্যস্ত পরিস্থিতি উপহার দিয়েছেন কিন্তু এই ভূমিকে পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্য কারও মনে সুচিন্তার উদয় হয় নি।
❝আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন
‘মানুষ হইতে হবে’ – এই যার পণ৷❞
আধুনিক কালের কবি কুসুমকুমারী দাশের উপরোক্ত কবিতার পংক্তির মতো বঙ্গভূমিকে সোনার ছেলেদের উপহার দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে একটি সংগঠন যার নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যার পথচলা ও আদ্যোপান্ত ইতিহাসের অনুপ্রেরণা বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।।
৪ঠা জানুয়ারি ১৯৪৮, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জ্বাজ্জল্যমান দিনগুলোর অন্যতম, এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির পতাকাবাহী এ সংগঠন জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়েছে, সৃষ্টি করেছে ত্যাগ ও গৌরবের মহান ইতিহাস এককথায় জন্ম দিয়েছে সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে সোনার ছেলে গড়ে তোলার এক প্রতিষ্ঠান।
৫২'র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৫৪সালের নির্বাচন, ৬২'র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬'র ছয় দফা, ৬৯'র গণ, ৭০'র নির্বাচন, ৭১'র অসহযোগ আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এক কথায় ছাত্রলীগের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। তাই, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ❝বাংলাদেশের ইতিহাস মানেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাস।❞
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির ধারক, সময়ের সাথে সাথে নিজস্ব কর্মপন্থার মাধ্যমে বিকশিত হয়। স্বাধীনতা পূর্ব কিংবা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের সফলতার বলিষ্ঠ অংশীদার ছাত্রলীগ। বর্তমানে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে, ২০৪১সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের মধ্যে নতুন জাগরণ ঘটাতে চায়। সেই লক্ষ্যে ১লা সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ৫লাখ ছাত্র-ছাত্রীর সমাবেশ ঘটিয়ে শপথ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল।
❝নেতা মোদের শেখ মুজিব, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ❞
❝ঝড় বৃষ্টি আধার রাতে, ছাত্রলীগ শেখ হাসিনার পাশে❞ কিংবা
❝শেখ হাসিনা সংসদে, ছাত্রলীগ রাজপথে ❞
ইত্যাদি স্লোগানে উৎসবমুখরতার রূপে যেন সারা বাংলার তারুণ্যের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল, বিস্মিতভাবে পূর্ব ঘোষণার দ্বিগুণেরও বেশি ১০লক্ষাধিক উপস্থিতি যোগ দেয় ১লা সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মোহনায়।
১৯৯৮সালে শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের হাতে খাতা-কলম-বই হাতে তুলে দিয়ে যেমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাস ও অপরাজনীতি দূর করে দিয়েছিলেন একইভাবে উন্নত সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ার কারিগর দেশরত্ন শেখ হাসিনার সারথি হয়ে,তারা ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৩ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শপথ নিয়েছে যে, ❝আমরা বাঙালির মহান স্বাধীনতা ও পূর্বপুরুষের পবিত্র রক্তেভেজা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের নব রূপায়নের রূপকার বাঙালির নির্ভরতার শেষ ঠিকানা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নামে দৃঢ়চিত্তে শপথ করিতেছি যে, তারুণ্যের স্বপ্নের স্বদেশ, পিতার কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা এবং কন্যার পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আপোসহীন, অক্লান্ত, আমৃত্যু সদা-সর্বদা সচেষ্ট থাকব। আমরা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম, বঙ্গমাতার সাধনা, দেশরত্নের সাহসকে নিজের জীবন গঠনে ও সমৃদ্ধ স্বদেশ গড়তে মূলনীতি মানবো। তারুণ লড়বে, তারুণ্য গড়বে, তারুণ্য দেশবিরোধী সকল শক্তিকে ধ্বংস করবে। বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে মর্যাদাশালী করতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াবে। জাতির পিতার আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রশ্নে এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।❞
১৯৭১সালে ৭ই মার্চে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্র জনতার সমাবেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রূপরেখা রচিত হয়েছিল একইভাবে ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৩সালের সমাবেশও বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের ম্যান্ডেটের প্রতি ১০লাখ ছাত্র-ছাত্রীদের বলিষ্ঠ সমর্থনে প্রতিফলিত হয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়নের একমাত্র সমাধান শেখ হাসিনা, হুংকার দিয়েছে শেখ হাসিনার পথচলাকে মসৃণ রাখার।
লেখক: মোঃ কামরুল হুসাইন,
সহ-সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
এসজে/আরইউ