নিজস্ব প্রতিনিধি:
হিন্দু সম্প্রদায়কে তাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে বিবেচনা না করে, বাংলাদেশে সমান অধিকার ভোগ করে তাদের জীবনযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আপনি কেন নিজেকে সংখ্যালঘু বলবেন? এখানে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কিছু নেই। বরং এখানে সব নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবে। সংখ্যালঘু হিসেবে নিজেকে ছোট করবেন না। যখন এই দেশের মানুষ তখন আপনি কেন এমন মনে করছেন?’
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পবিত্র জন্মাষ্টমী উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবন গণভবন প্রাঙ্গণে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যারা এই মাটিতে জন্মেছে, তারা এই মাটির সন্তান এবং এই মাটির নাগরিক হিসেবে তাদের অধিকার আছে। সুতরাং, আপনি সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সর্বদা বাংলাদেশে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে চেষ্টা করছে। একইসাথে সামাজিক সংহতি বজায় রাখার চেষ্টা করছে যেখানে একজন আরেকজনকে হেয় করবে না এবং সব মানুষ সমান অধিকার উপভোগ করে জীবনযাপন করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি সব জায়গায় কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আছে, যারা কিছু সমস্যা তৈরি করতে চায়। সবাইকে মনোযোগ দিতে হবে যাতে কেউ সমস্যা তৈরি করতে না পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে কিছু লোক আছে, যারা বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের বদনাম করে।’ তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মো: ফরিদুল হক খান এবং এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বারবার দমন-পীড়নের শিকার হয়।
তিনি বলেন, আমরা আবারো সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। হাসিনা তার দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনার জন্য এবং বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু তারা আমাদের ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে, তাই আমরা সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আবারো অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছি এবং আমরা সুযোগ পেয়েছি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে।
ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধার করেছে এবং একটি স্লোগান ঘোষণা করেছে যে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
তিনি বলেন, ‘আমি চাই আপনারা সবাই নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন করুন। (সরকারি) চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল, কিন্তু এই বৈষম্য এখানে আর নেই।’
তিনি বলেন, সরকার সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করে।
সময় জার্নাল/এলআর