সময় জার্নাল প্রতিনিধি:
তিনি একাধারে একজন সফল শিক্ষক, সুষম সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা, গরীববান্ধব সুষম সমাজ বিনির্মাণে আজীবন কাজ করার প্রত্যয় যার, মৌলিক চিন্তাবিদ, মননশীল লেখক, আজীবন যার অদম্য আগ্রহ গরিবের জীবন ও অর্থনীতি নিয়ে, সবসময় কাজ করছেন অসহায় মানুষের পক্ষে। অর্থনীতিবিদ ও এনবিইআর'র চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিথযশা অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। দীর্ঘদিন ধরে সংকটকালে জাতিকে দিশা দিয়ে যাচ্ছেন যিনি। স্পষ্টবাদী হিসেবে পছন্দের ব্যক্তিতে পরিণত হওয়া অধ্যাপক পারভেজের লেখাও সমাদৃত হয়েছে। দেশের রাজনীতি, দারিদ্র্যের অর্থনীতি ও সাধারন জনগনের পক্ষে তার ক্ষুরধার লেখা ও বলা মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। তার লেখায় সমস্যা যেমন আলোচনা করা হয়েছে, তার সাথে ঐসব সমস্যা সমাধানের সুন্দর দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
দারিদ্র্য এ অঞ্চলের প্রধানতম সমস্যা। যুগ যুগ ধরে অসংখ্য প্রকল্প তৈরি হয়েছে দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্য নিয়ে। খরচ করা হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। আর এই দারিদ্র্যের অর্থনীতি নিয়ে সবসময় সোচ্ছার অধ্যাপক পারভেজ দেশের অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উন্নতি, অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে লিখে গেছেন ধারাবাহিকভাবে। কেবল দারিদ্র্য, অর্থনীতি নয়, গরীব বান্ধব বাজেট নিয়েও লিখেছেন তিনি। বাংলাদেশের বাজেটের পরিবর্তনগুলো যেমন ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, তেমনি বাজেট ব্যবস্থার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধানগুলোও খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত অধ্যাপক পারভেজের লেখাগুলো নিয়ে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে বই 'প্রসঙ্গ: সুষম সমাজ, গরীববান্ধব বাজেট, দারিদ্র দূরীকরণ তত্ত্ব'। পূর্বেও সুষম সমাজ বিনির্মাণ নামে তার বই প্রকাশিত হয়েছে। অধ্যাপক পারভেজ প্রকাশিত হতে যাওয়া বইটির মুখন্ধ নিচে দেয়া হল-
মুখবন্ধ
প্রবাদ আছে যে, “ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে।” তেমনি প্রফেসর পারভেজের বেলায়ও কথাটা যেন শতভাগ প্রযোজ্য। কারণ গরীববান্ধব এই অধ্যাপকের চিন্তা-চেতনা জুড়ে সবসময় থাকে মানুষ বিশেষ করে গরীব মানুষ, সমাজ ও দেশ।
ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত সময়ে দেশ ও সমাজকে আলোকিত করে তার লেখা। সব অন্ধকার তাড়িয়ে দিয়ে এক আলোজ্জ্বল সমাজ, দেশ ও পৃথিবী গড়ার তাড়ণা প্রকাশ করে তাঁর লেখা । তিনি তাই এমন একজন মানুষ হিসেবে প্রতিভাত হন- যেন তিনি এক ধ্রুবতারা! যাকে দেখে দিশাহারা সমাজ ও জাতি পথ পথ খুঁজে পেতে পারেন।
প্রচুর্য্যরে মধ্যে জন্ম ও বেড়ে ওঠা আবস্থান হলেও তিনি প্রচালিত ধারার গড্ডালিকায় ভেসে যাবার মানুষ নন। তাই তিান সব সময় রুখে দাঁিড়য়ে যান সকল অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে। সকল অন্যায়-অনাচারে বিরুদ্ধে তিনি তীব্র প্রতিবাদের বজ্রকণ্ঠ হয়ে ওঠেন। তাই তাকে বলা যায় দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালের নায়ক। তিনি প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।
এই “প্রসঙ্গ: সুষম সমাজ, গরীববান্ধব বাজেট, দারিদ্র দূরীকরণ তত্ত্ব” নামক পুস্তকে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজের প্রবন্ধ। বলাই বাহুল্য যে, লেখার প্রধান উপজীব্য মৌলিক বিষয়ই হচ্ছে মানুষ ও চলমান সব ইস্যু। কিন্তু সবকিছুর মাঝেই মানুষ ও দেশজাতির কল্যাণের উপলক্ষ্য প্রকট হয়ে ওঠে। তার চিন্তা চেতনার স্বরূপ ও তার দর্শন তাতে প্রভাব ফেলেছে। কারণ তিনি দেখার মতো দেখে না ! তিনি যা চোখ দিয়ে দেখেন। তা হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন। এবং লেখার মধ্য দিয়ে দেখাকে কার্যকরণে রূপান্তরিত করেন। তাই তার দেখা শুধুই দেখা নয় দর্শন বলা যেতে পারে।
আমি আগেও বলেছি, প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ একজন বিরল-প্রজাতির সাদা মনের মানুষ। অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে,বৈষম্য ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ওয়ানম্যান আর্মি ! তিনি তাঁর জীবনব্যাপী আপন আপন কর্ম ও পথ-পরিক্রমায় ক্রমেই হয়ে উঠেছেন বঞ্চিত দরিদ্র নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত গণমানুষের সাহসী ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। তাঁর কণ্ঠ ক্রমেই কোটিকণ্ঠ হয়ে ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বময় এই প্রত্যাশাই রইলো!
ভৌগলিক ও রাজনৈতিকভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ সফল হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে তা বাস্তবায়িত করতে হলে পুস্তকটির বহুল প্রচার প্রত্যাশিত হোক।
উল্লেখ্য, দেশের মানুষের কাছে তিনি পরিচিত জাতীয় অধ্যাপক গরীববান্ধব অর্থনীতিবিদ হিসেবে। ১৯৫৯ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। তার পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন একজন শিল্পপতি এবং মাতা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ডাক্তার হুসনে আরা। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মালেও অন্নহীন,বস্ত্রহীন,গৃহহীন মানুষদের পাশেই তিনি নিজের ঠিকানা করে নিয়েছেন। স্বাধীনতার আগে শোষণ ছিল এককেন্দ্রিক কিন্তু স্বাধীনতার পর বর্তমানে চতুর্মুখী শোষণে নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র মানুষরা দিশাহারা! এই মহা-ক্রান্তিকালে তাদের পাশে যেন একমাত্র ওয়ান-ম্যান আর্মি হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অধ্যাপক পারভেজ। অধ্যাপক পারভেজ সেন্ট প্লাসিডস্ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএস এ ১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত গবেষনা করেন। ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি দেশ-বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠদান করেছেন।
১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নীতি বিশ্লেষক এবং দেশের একজন নেতৃস্থানীয় গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলাম পারভেজ বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে আন্ডারগ্র্যাড অ্যান্ড পোস্টগ্র্যাড পর্যায়ে ব্যবসায় ও যোগাযোগ শিক্ষা দিয়ে আসছেন।
অধ্যাপক পারভেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির বিজনেস ফ্যাকাল্টির সাবেক ভাইস-ডিন, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইবিবিটির ভাইস রেক্টর, রুপালী ব্যাংকের পরিচালক, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক ছিলেন।
এছাড়াও তিনি বিজনেস স্টাডিজ সেন্টার ফর এআইএম এক্সপ্লোরার এর সম্পাদক, ভারতের মহামায়া কারিগরি ইউনিভার্সিটির ইউপি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর, সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স, চট্টগ্রাম এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনোমিকস রিসার্চ (এনবিইআর) এর চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক পারভেজের একাডেমিক ও পেশাগত স্বার্থগুলিতে রাজনীতি, অর্থনীতি, যোগাযোগ এবং প্রশাসন অন্তর্ভুক্ত। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন বিখ্যাত জার্নাল এবং সংবাদপত্রে তাঁর অনেক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
বয়সকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে তিনি এখনো জ্ঞানের মশাল জ্বালিয়ে যাচ্ছেন, কাজ করে যাচ্ছেন গরীব মানুষের জন্য। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিচ্ছেন জ্ঞানের আলো। সবসময় পাশে থাকছেন অসহায় মানুষের, কাজ করে যাচ্ছেন সুষম সমাজ বিনির্মাণে।
এমআই