সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া প্রবর্তনের জন্য ‘ডব্লিউএসআইএস’ পুরস্কার পেল বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
মঙ্গলবার (১৮ মে) বিকেলে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কার প্রাপ্তির পর ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
পুরস্কার অর্জন উপলক্ষে বিটিআরসির প্রধান সম্মেলন কক্ষে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, আজকে আমাদের আনন্দের দিন এবং অসাধারণ অর্জনের দিন।
তিনি বলেন, সিবিভিএমিপি বিশ্বে একটি স্বীকৃত প্রকল্প। এটি বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মননা বয়ে এনেছে। আমি এ সম্মানের কৃতিত্ব বাংলাদেশের সব মানুষের সঙ্গে ভাগ করতে চাই এবং প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাই। বিটিআরসি অনেকগুলো প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে, যার সুফল গ্রাহকরা শিগগিরই পাবে বলেও জানান তিনি।
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস (এসএস) বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজসহ টিমের অন্যান্য সদস্যদের, মোবাইল অপারেটর এবং সিনেসিস আইটিসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বিটিআরসির মহাপরিচালক (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম বা সিবিভিএমপি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিটিআরসি সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম বা সিবিভিএমপি প্রকল্পটি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২১ প্রতিযোগিতার অ্যাকশন লাইন সি-ফাইভ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে। অ্যাকশন লাইন সি-ফাইভ এর মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘বিল্ডিং কনফিডেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ইন ইউজ অব আইসিটি’স।
ডব্লিউএসআইএস ফোরামের প্রধান লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়িয়ে ধনী-দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন দূর করা। একই সঙ্গে সারা বিশ্বের সৃজনশীল উদ্ভাবনগুলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে এ ফোরাম। ২০১২ সাল থেকে পুরস্কার দিয়ে আসছে ডব্লিউিএসআইএস কর্তৃপক্ষ, যাতে এ পর্যন্ত অংশ নিয়েছে তিন লাখেরও বেশি অংশীদার।
ডব্লিউএসআইএসের প্রতিযোগিতায় সরকারি, বেসরকারি, সাধারণ নাগরিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প জমা দেওয়ার পাশাপাশি ডব্লিউএসআইএসের অংশীদাররাও এতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাপ্ত আবেদন থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাছাই ও অনলাইন ভোটিং প্রক্রিয়ার শেষে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মোট ১৮টি ক্যাটাগরিতে আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং প্রতি ক্যাটাগরিতে একটি করে মোট ১৮টি প্রকল্পকে চূড়ান্ত বিজয়ী (উইনার) হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বিটিআরসি এবছরই প্রথম এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার দায়িত্ব গ্রহণের পর এ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন। গত ২৫ জানুয়ারি কমিশনের সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগ সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম (সিভিএমপি) প্রকল্পটি জমা দেয়। পরবর্তীতে ডব্লিউএসআইএস কর্তৃপক্ষ সিবিভিএমপি প্রকল্পটি অ্যাকশন লাইন সি-ফাইভ ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ২০টি প্রকল্পের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে মর্মে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। গত ১ মার্চ শুরু হয় ভোটিং পর্ব। এ লক্ষ্যে কমিশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, লিফলেট এবং তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রচারণা চালানোয় সিবিভিএমপি প্রকল্পটি ১৫ হাজারের বেশি ভোট পায়। গত ১৯ এপ্রিল প্রাপ্ত ভোট ও বিচারকদের মূল্যায়নের পর সিবিভিএমপি প্রকল্পটি অ্যাকশন লাইন সি ফাইভ ক্যাটাগরিতে শীর্ষ পাঁচ প্রকল্পের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন প্রকল্প হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের কমিশনার প্রকৈাশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার আবু সৈয়দ দিলজার হুসেইন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসাইন, মহাপরিচালক (স্পেকক্ট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম, মহাপরিচালক (ইঅ্যান্ডও) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এহসানুল কবির, মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং) আশীষ কুমার কুন্ডু, মহাপরিচালক (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) প্রকৌশলী মো. মেসবাহুজ্জামানসহ বিটিআরসি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।