নিজস্ব প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ শূন্য আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ নভেম্বর এই দুই আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর সংসদ সচিবালয় এই দুই আসন শূন্য ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই দুই আসনের সংসদ সদস্যরা মৃত্যুবরণ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপি আব্দুস সাত্তার ভূঞা এবং লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি একেএম শাহজাহান কামাল রাজধানীর একটি হাসপাতালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মৃত্যুবরণ করেন।
সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের কোনো আসন শূন্য হওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর আসন শূন্য হওয়ার তারিখ হিসেবে এই দুই আসনে উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে। এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে আগামী ২ নভেম্বর। এদিন আসনভিত্তিক ৩০০ সংসদীয় আসনগুলোর ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হবে। আর এর পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা করা হতে পারে নির্বাচনের তফসিল।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, একটি উপনির্বাচন সম্পন্ন করতে ৪০ দিনের মতো সময়ের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পূর্বে ৪০ দিন সময় হাতে পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। আবার স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের কোনো পদ শূন্য হলে সেই স্থানীয় সরকারের মেয়াদ পূর্তির আগের নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করা যায় না। তবে সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হওয়ার পরে বা সময় গণনার পরেও ভোটের তারিখ রাখতে না পারার বিষয়ে আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তিতে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্রেট হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন পান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে জয়লাভ করে ফের সংসদে আসেন তিনি।
অন্যদিকে, বীর মুক্তযোদ্ধা একেএম শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
সময় জার্নাল/এলআর