ফাহিম হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি:
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, 'আমরা এমপি মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাস্তায় নামি নাই। দেশকে বাঁচানোর জন্য নেমেছি। এবার সরকারের পরিবর্তন হবেই। এই সরকারের পরিবর্তনের জন্য বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশও আওয়াজ তুলেছে। ' শনিবার শাহবাগ চত্বরে জাতীয় যাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে তিনি এসব বলেন।
বুয়েটশিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী ও ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর নেতার্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থী নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
তিনি বলেন, 'সরকার আজকে বলছে তারা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। অথচ সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে বাচ্চার জন্য মাছ ডিম কিনতে বেগ পেতে হয়। ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ব কোথায় গেল? যে ডলার রিজার্বে আছে তা দিয়ে দুই মাসের বেশি খাদ্য আমদানি করতে পারবে না। পত্রিকায় এসেছে কাগজ কিনতে না পারায় পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে স্কুলে। শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশকে দেউলিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেধরনের কথা বলেছেন, একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কখনো এ ধরনের কথা বলতে পারে না। এছাড়া, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলবিজয়ী ড. ইউনুসকে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে আদালতে ঘোরাচ্ছেন। যেমনিভাবে খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে জেলে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি যেটা বলবেন সেটাই আইন এবং বাংলাদেশে কার্যত সেটাই চলছে।'
ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'ছাত্রলীগ একটা দৈত্য দানবের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুইগ্রুপের হামলায় আবু বকর নিহত হয়েছে। বিশ্বজিৎকে তারা কুপিয়ে হত্যা করেছে। ছাত্রলীগ আজকে হিংস্র হয়ে উঠছে এই ব্যবস্থার কারণে। গত ১১ বছর ছাত্রলীগ ভিন্নমতের উপর দমন চালিয়েছে।'
সমাবেশে সংহতি রেখে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, 'বর্তমান সরকারের কাছে আমি কোন দাবি জানাই না। কারণ সরকার বৈধ নয়। যারা দেশকে ভালোবাসে, তারাই দেশের জন্য দাড়ায়। আবরার ফাহাদ মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। মেধাবী বলেই সে অন্যায়কে শনাক্ত করতে পেরেছিল।'অনুষ্ঠানে পুলিশ এসে ছবি তুললে তিনি পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আপনাদের ছবিও আমরা তুলে রাখছি। কারা কারা সরকারের পক্ষ হয়ে কাজ করছেন।'
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন,' বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার কারণে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদিজাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে একবছর হাজতে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের শাহরিয়ারকে পিটিয়ে বলছে 'তোকে এখন আবরারের মতো হত্যা করবো।' এভাবে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে দেখানো হচ্ছে, যদি কোন সাধারণ শিক্ষার্থী সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তাহলে তার এই অবস্থা হবে।'
এসময় নেতাকর্মীরা পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার মুক্তির দাবি জানান।
সংহতি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইফতেখার আলম মাসুদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদাল আহমেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব, ঢাকা মহানগর সভাপতি আসাদ বিন রনিসহ প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এলআর