ডা. আফতাব হোসেন :
বসেছিলাম “ইরানি দাস্তান” লিখতে। লিখতে বসে খবরের কাগজে চোখ বুলানো বহুদিনের অভ্যাস আমার। হঠাৎ প্রথম আলোর একটা হেড লাইনে চোখ আঁটকে গেল, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাধারণত দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে খসড়া বিনিময়ের সময় নির্ধারিত অংশে সই করে থাকে। চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ এ ধরনের খসড়া ইংরেজির পাশাপাশি তাদের নিজেদের ভাষায় পাঠায়। সে ক্ষেত্রে খসড়া চুক্তিতে দুই ভাষার নির্ধারিত অংশে সই করতে হয়। মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়, “যেখানে একটি অংশ ছিল ইংরেজিতে এবং আরেকটি ছিল চীনা ভাষায়। আমরা (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) সই করে ফেরত পাঠানোর সময়ে চীনা ভাষার অংশে সই করেছি। এটা জানার পর চীনা ভাষার অভিজ্ঞ একজন অধ্যাপককে নিয়োগ করে সেটি (ডকুমেন্ট) সংশোধন করা হয়েছে। দিস আর লাউজি ওয়ার্ক এবং এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করেনি।“
যেখানে প্রতিদিন দেশে হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, যেখানে প্রচুর মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে, যেখানে সীমান্তের ওপারে করোনার ভারতীয় ভেরিয়েন্ট চোখ রাঙ্গাচ্ছে, যে কোনো সময় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে বীর বিক্রমে, যেখানে অসহায় গৃহবন্দি মানুষ সুদিনের আশায় আধির আগ্রহে দিন গুনছে, যেখানে যত দ্রুত সম্ভব দেশের মানুষকে ভ্যাক্সিনেশন করাই করোনা প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান উপায়, সেখানে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের “লাউজি ওয়ার্ক” এর কারণে টিকা পেতে দেরি হচ্ছে। এই হল আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথাকথিত “রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ গোপন” তথ্যের নমুনা যা প্রকাশিত হলে তাদের দক্ষতা প্রশ্নের সম্মুখীন হয় এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
ভাগ্যিস তথ্যটি মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাঁস করেছেন, একজন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ফাঁস করেননি ! করলে……
এ সব দেখেশুনে ইরানি দাস্তান লেখার মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল !!!!!
সময় জার্নাল/ইএইচ