অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের শূন্য পদে উপনির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে এক ছাত্রলীগ নেতার প্রকাশ্যে ব্যালট বইয়ে অনবরত নৌকা মার্কায় সিল মারার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার (৫ নভেম্বর) ভোট চলাকালীন চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি আজাদ হোসেন সিলগুলো মারেন। নৌকার এককর্মী তাকে সহযোগিতা করেন। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে নৌকা প্রতীকের একটি গান জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
আজাদ হোসেন নির্বাচনী এলাকার সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন। ভিডিওতে তার গলায় নৌকার কার্ড ঝুলতে দেখা যায়। ভোটকক্ষের বেঞ্চে বসে একটি ব্যালট বইয়ের পাতা উল্টিয়ে একাধিক সিল মারতে দেখা যায় আজাদকে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, খুব দ্রুত নৌকায় সিল মারছেন আজাদ হোসেন। এসময় তাকে একজন সহযোগিতা করেন। চল্লিশের অধিক ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারেন তিনি।
আজাদ চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে আজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার ভোট দিয়েই আমি কেন্দ্র থেকে চলে এসেছি। ভিডিওর বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ভিডিওটি দেখলে বলতে পারবো।’
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সম্প্রতি আজাদকে ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই সে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। এরা দলের জন্য বিপদজ্জনক।’
লাঙলের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিব হোসেন বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্রে প্রভাব খাটিয়ে জাল ভোট দিয়েছেন। নৌকায় সিল মারার ভিডিওটি তার বড় প্রমাণ।’
এ বিষয়ে উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ভিডিওটি আমার নজরে পড়েনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে তাকে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। কারণ আমরা এরইমধ্যে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দিয়েছি।’
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু। যেখানে ভোটার কেন্দ্র শূন্য ছিল সেখানে এত ভোট কিভাবে এলো এই নিয়ে ভোট সংশ্লিষ্ট অনেকেই মন্তব্য করেন।
এছাড়া লাঙল প্রতীকের মুহাম্মদ রাকিব হোসেন তিন হাজার ৮৪৬, গোলাপ ফুল মার্কার সামছুল করিম খোকন দুই হাজার ১২৬ ও আম প্রতীকে সেলিম মাহমুদ পেয়েছেন ৫১৩ ভোট। তবে নির্বাচনে জাল ভোট, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের বলপ্রয়োগ, কেন্দ্র এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া ও এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
সময় জার্নাল/এলআর