জাবি প্রতিনিধি : বনভূমি উজাড় করে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ না করে অংশীজনের মতামত নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে সংহতি সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বরে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলনে’র ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জাহাঙ্গীনগরে মাস্টারপ্ল্যান করার কথা দিয়েও তা করা হলো না। অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র ভবনগুলো নিমার্ণ হতে থাকলো। ঠিকাদাররাই জাহাঙ্গীরনগরে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। এটাকে ঠিকাদার পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প বলা যেতে পারে। মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে তর্ক বিতর্ক হচ্ছিলো তখন এর নাম পরিবর্তন করে ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’ নাম দেয়া হচ্ছে। আমরা বলছি আইবিএ ভবন দরকার, বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসরুম সংকট দূর করা দরকার। এগুলো দরকার বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা দরকার।
উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ মাহা মির্জা বলেন, উন্নয়নের নামে আমরা পরিবেশ ধ্বংস করেছি। ভবিষ্যতে আমাদের এমন দূর্যোগের মুখোমুখি হতে হবে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। উন্নয়নের নামে এ আগ্রাসন বন্ধ করা ছাড়া এ ভয়ংকর পরিণতি ঠেকানো সম্ভব নয়। প্রাণপ্রকৃতি না বাঁচলে আমরা নিজেরাই বাঁচতে পারব না। পরিবেশ বাঁচাতে চাইলে বনভূমি রক্ষা করতে হবে; উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংস করার সকল উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে আজকে দু’টি পক্ষকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কখনোই বলেনি ক্লাস রুমের প্রয়োজন নাই। এখানে বিজনেস ফ্যাকাল্টির সাথে একটা বহুতল ভবন করে সেখানে আইবিএকে দেয়া যেত না? শিক্ষক রাজনীতির মারপ্যঁাচে শিক্ষার্থীদের কেন মুখোমুখি দাঁড় করাবেন? আমরা বলছি বিশ^বিদ্যালয়ে যাদের ক্লাসরুম সংকট আছে সবার ভবন দরকার। তবে সেটা হতে হবে মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে। খুলনা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান এ বিশ্ববিদ্যালিয়ের শিক্ষকরা করেছে। তাদের মতামত নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যেও একটা কার্যকর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের প্রকৃতির সাথে শিক্ষক—শিক্ষার্থীদের আত্মার সম্পর্ক আছে। এখানকার ছাত্র—যুবসমাজের সকল আন্দোলনে দেশের প্রাণপ্রকৃতি রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে যে ১৫/১৬ শতাংশ বনভূমি আছে সেখানে জাহাঙ্গীরনগরের প্রকৃতি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। ঢাকা শহরে বনভূমি, জলাশয় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন আর প্রজেক্টের কাছে সারা বাংলাদেশ এখন জিম্মি হয়ে গেছে। আমরা প্রাণ—প্রকৃতি ধ্বংস করে কোন উন্নয়ন চাই না।’
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, অধ্যাপক পারভীন জলি, অলিউর সান প্রমুখ।
এসজে/আরইউ