সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

লাল পিঁপড়ার ডিম থেকেই জোটে দুবেলা দুমুঠো ভাত

শুক্রবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৩
লাল পিঁপড়ার ডিম থেকেই জোটে দুবেলা দুমুঠো ভাত

জেলা প্রতিনিধি:

বেঁচে থাকার জন্য কত বিচিত্র কাজই না করতে হয় মানুষকে। এরকই ব্যতিক্রম এক পেশা পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করা। আর এ পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহের পেশা থেকেই দুবেলা দুমুঠো খাবারের জোগাড়। 
   
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে মাছের খাবার ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টোপ হিসেবে ব্যবহার করা লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে স্থানীয় পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। সেই পাইকারদের হাত ধরেই এসব পিঁপড়ার ডিম বিক্রি হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লায়। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তারা পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করেন।

প্রতিদিন ১ থেকে দেড় কেজি পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করতে পারেন জানিয়ে মো. রুস্তম আলী বলেন, ‘সকাল হলেই বাঁশ ও ঝুড়ি নিয়ে বের হয়ে গাছ থেকে ডিম সংগ্রহ করি। বিকেলে এসব ডিম পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। প্রতি কেজি ডিম ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করি।’

৭-৮ বছর ধরে এ কাজের সঙ্গে জড়িত মো. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ডিম সংগ্রহ করতে অনেক কষ্ট হয়। পিঁপড়াগুলো সাধারণত মগডালে বাসা বাঁধে। ডিম সংগ্রহ করার সময় কমবেশি কামড় খেতে হয়। সারাদিন বনে-জঙ্গলে ডিমের আশায় ঘুরে বেড়াতে হয়। পিঁপড়ার বাসা খুঁজে পাওয়ার ওপর নির্ভর করে তার আয়।’

ডিম সংগ্রহকারী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সব পিঁপড়ায় ডিম পাওয়া যায় না। এ জন্য প্রয়োজন লাল পিঁপড়ার বাসা। লাল পিঁপড়ার বাসায় মেলে প্রচুর সাদা ডিম। সাধারণত মেহগনি, আম, লিচু, কনক ও কড়ইসহ দেশীয় গাছগুলোয় লাল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়।’

লাল পিঁপড়ার ডিমের স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘স্থানীয় ২০-২৫ জন পাহাড়ি বন-জঙ্গল থেকে লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে আমার কাছে বিক্রি করেন। পিঁপড়ার ডিম কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লায় বিক্রি করি। মূলত মাছের খামারি ও সৌখিন মাছ শিকারীরা এ ডিম কিনে থাকেন।’

মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ১৮-২০ জন আমাকে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে দেন। ২-৩ দিন পরপর চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লা থেকে ব্যবসায়ীরা ডিম কিনে নিয়ে যান। একসময় এ পেশায় লোকজন কম ছিল। তখন প্রচুর ডিম পাওয়া যেত। লোকজন বাড়লেও দেশীয় গাছ কাটার কারণে পিঁপড়ার বাসা কমে গেছে। তাই নির্বিচারে দেশি গাছ কাটা বন্ধের দাবি জানাই।’

পানির নির্দিষ্ট স্থানে আধার ফেলে মাছ ডেকে আনার জন্য এই ডিমের চাহিদা রয়েছে জেলেদের কাছেও। এজন্য অনেক সময় জেলেরা তাদের কাছ থেকে ডিম কিনে থাকেন বলে জানান বাশার শেখ।

কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ। এই কাজে কোনো পুঁজি লাগে না। এজন্য এটাকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছি। সারাদিনে তিনি এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। আর তাতেই চলে বাবা-মা-স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে ৬ জনের সংসার।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল