মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুপেয় পানির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সুন্দরবন সংলগ্ন ব-দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার সাধারণ মানুষেরা। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের উদ্যোগে শনিবার বেলা ১০টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার চকবারা এলাকায় এই মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাবেক ইউপি সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর আব্দুর রাজ্জাক, লিডার্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আলীম আল রাজী, প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ আরিফুর রহমান, লিডার্সের অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা মলিক, টেকনিক্যাল অফিসার নিতিকেশ মন্ডল, প্রোজেক্ট অফিসার সুলতা সাহা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চল জলবাযু পরিবর্তনের অন্যতম হটস্পট। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড, জলোচ্ছ¡াস, লবণাক্ততার হার ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে । চারিদিকে নোনা পানি অথচ খাবার জন্য সুপেয় পানি কোথাও নেই। তাই উপকূলের কোটি মানুষের জন্য সুপেয় পানির দাবিতে এই মানববন্ধন করেছ গাবুরাবাসী।
বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এর কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বছরে ৪ মিলিমিটার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ উচ্চতা আরও বাড়বে। ফলে দক্ষিন উপকূল তলিয়ে গিয়ে ১ কোটিরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। এরই মধ্যে ঘন ঘন দুর্যোগ এবং বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠা তার পুর্ব লক্ষণ। এইসব দুর্যোগ ও টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে লবনাক্ত পানিতে সয়লাব হচ্ছে উপকূলের এই জনপদ। এতে পরিবেশ ও বসতি ধ্বংসের পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠছে।
অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের কারণে লবনাক্ততার এই মাত্রা আরও বাড়ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে গত ৩৫ বছরে লবনাক্ততা পূর্বের তুলনায় ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যার পরিমাণ ২ পিপিটি থেকে বেড়ে ৭ পিপিটি হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিনাঞ্চলে সমুদ্র থেকে ভূভাগের অনেক ভিতর পর্যন্ত লোনা পানি ঢুকে গেছে। ফলে মানুষ লবণাক্ত পানি খেতে বাধ্য হচ্ছে। এই লোনা পানির ব্যবহারে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে মহাপরিকল্পনা করা দরকার ।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে যেন উপকূলীয মানুষের জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয় এবং উপকূলীয় মানুষের জন্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় মানববন্ধন থেকে
তার দাবি জানান বক্তারা।
এমআই