আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হামাস ইসরায়েল যুদ্ধের প্রায় দেড় মাসের মাথায় যুদ্ধবিরতিতে যাচ্ছে ইসরায়েল। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বর হামলা চালিয়ে ১২ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা আর গোটা গাজাকে ধ্বংস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল। কিন্তু হামাস নির্মূলে ইসরায়েলের সামরিক কৌশল আসলে কাজে আসছে কিনা, এখন সেই প্রশ্ন সামনে আসছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার স্থল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি হলেও হামাসকে পরাজিত করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এ ছাড়া, জিম্মিদেরও মুক্ত করতে পারেনি তারা। উল্টো বিপুল সংখ্যক বেসামরিক ফিলিস্তিনি হতাহতের কারণে উল্টো নজিরবিহীন আন্তর্জাতিক নিন্দা ও চাপে পড়েছে ইসরায়েল। এমন বাস্তবতায় শিগগির পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ইহুদিবাদী দেশটি সম্মত হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার।
রোববার (১৯ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসের ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফিনার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমতির শর্তে ১২ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্ত করার চুক্তি হচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী সবশেষ অভিযানের কেন্দ্রস্থল বানিয়েছে গাজার সবচেয়ে বড় আল শিফা হাসপাতালকে। আল শিফা ঘিরে রাখলেও ইসরায়েলি বাহিনী এখনও হাসপাতালটির অধীনে বড় টানেল নেটওয়ার্ক এবং কমান্ড সেন্টার থাকার প্রমাণ দিতে পারেনি। তবে সর্বশেষ দেশটি দাবি করে, হাসপাতালের নিচে ৫৫ মিটারের সুড়ঙ্গ পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাড. ড্যানিয়েল হাগারি গত শুক্রবার বলেছেন, হামাস এখন দক্ষিণে রয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট গত সোমবার বলেন, ইসরায়েল সুড়ঙ্গের বিরুদ্ধে অভিযান ত্বরান্বিত করেছে। হামাস উত্তরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাজার দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণে চলে গেলে এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গেলে তাদের নির্মূল করা আদৌ সম্ভব কিনা? একই সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে ইসরায়েল আসলে কতদিন গাজায় এই অভিযান চালাতে পারবে– এমন প্রশ্নও করেছেন তারা।
এদিকে, ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই চুক্তিতে পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতি হতে পারে। এটি বাস্তবায়নে মাধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে হামাস কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
অন্যদিকে, গতকাল রোববার কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি জানান, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য খুব কাছাকাছি রয়েছি।’ কাতার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ২৪০ জিম্মিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মধ্যস্থতা করছে। দেশটির প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত চার জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।
সময় জার্নাল/এলআর