বুধবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
লাবিন রহমান:
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের আগ মুহূর্তে পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন বাংলার বুদ্ধিজীবীরা। জাতির মহান এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। দিবসটিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৩ পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে যেসব দিবস পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সেগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনটি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে ১৯৭২ সাল থেকে প্রথাগতভাবে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে। এছাড়াও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এ সরকারের আমলে নির্মিত হয়েছে।
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসটি সরকারি গেজেটে না থাকার বিষয়টিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন শিগগিরই বুদ্ধিজীবী দিবসটি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করে তা প্রকাশ করা হবে।
ডিসেম্বর মাস বাঙালির জাতীয় জীবনে যেমন পরম প্রাপ্তি ও অনন্য গৌরবে উজ্জ্বল, তেমনই মর্মান্তিকতায় আচ্ছন্ন। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারানোর বেদনাময় স্মৃতি নিয়েই প্রতিবছর উপনীত হয় ১৪ ডিসেম্বর। গভীর শ্রদ্ধায় এই দিনটিতে স্মরণ করা হয় জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। যারা তাদের জীবন চিরতরে উৎসর্গ করে গিয়েছেন এদেশের ভবিষ্যৎ ও মহান স্বাধীনতার জন্য।
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করে। ১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাসে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তানী বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে নিঃশেষ করে দেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এই পরিকল্পিত গণহত্যাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বন্দী অবস্থায় বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত ও বিকৃত লাশ রায়েরবাজার এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়। অনেকের লাশ শনাক্তও করা যায়নি, পাওয়াও যায়নি বহু লাশ। জাতির মহান এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
সময় জার্নাল/এলআর