নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ শতাংশ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। মানুষের শরীরে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী প্রধান জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার এর প্রথম ও প্রধান কারণ। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০৫০ সালে গিয়ে দেখা যাবে করোনার থেকেও বেশি রোগী মারা যাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণে।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসা নিতে যাওয়া ৭২ হাজার ৬৭০ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও কার্যকারিতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী।
বিএসএমএমইউর মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে অন্তত ৭৫ ভাগ ইনফেকশন হয় টাইফয়েড, ই-কোলাই, স্ট্যাফাউরিয়াস, ক্লিবশিয়েলা ও সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাকসেস ও ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ শতাংশ অকেজো হয়ে গেছে।
এছাড়া আইসিইউয়ের রোগীদের যে অ্যান্টিবায়োটিকে চিকিৎসা চলতো, তা এখন ওয়ার্ডের রোগীদেরও দিতে হচ্ছে। এতে বোঝা যায় পরিস্থিতি কতটা খারাপের দিকে যাচ্ছে।একই সঙ্গে যেসব জীবাণু আগে শুধু আইসিইউতে মিলতো সেগুলো এখন কমিউনিটিতেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যাবে না। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে মানুষ এখন প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৭০ হাজার লোক মারা যায় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণে।
এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ২০৫০ সালে গিয়ে দেখা যাবে করোনার থেকেও বেশি রোগী মারা যাবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কারণে। হাসপাতালে দর্শনার্থীরা রোগীদের দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, হাসপাতালে যাবেন রোগী দেখতে, একটু দূরে থেকে দেখতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় রোগীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে সাধারণ মানুষও রোগী হয়ে যায়। এটিকে ক্রস ইনফেকশন বলে। এজন্য হাসপাতালে গেলেও দ্রুত সেখান থেকে চলে যেতে হবে।
সময় জার্নাল/এলআর