চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
মে মাসে বিদ্যুৎ বিলের কপি হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীতি ইউনিয়নের রানীবাড়ী চাঁদপুর গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা। বিগত কয়েক মাসের তুলনায় মে মাসে হঠাৎ করে বিলের পরিমাণ দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার গ্রাহকের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মে মাসে ২ থেকে ৪ গুণ পর্যন্ত বেশি বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় ব্যক্তির অবহেলা ও দুর্নীতি অনিয়মের কারণেই এমনটি হচ্ছে। গ্রাহকদের ভৌতিক বিলের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ায় শিবগঞ্জ উপজেলার চককীতি ইউনিয়নের রানীবাড়ী চাঁদপুর গ্রামের সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা শিবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম দিয়েছে, ‘পল্লী বিপদ’।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মিটার রিডারদের চরম অনিয়ম ও কারসাজির কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকের হয়রানি ও দুর্ভোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই। প্রতি মাসে মিটারের ইউনিট তদন্ত করেই গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ইস্যু ও সরবরাহ করার নিয়ম। কিন্তু অধিকাংশ গ্রাহকদের মিটার না দেখেই মিটার রিডাররা বাড়িতে বসে অনুমান নির্ভর মনগড়া ও ভুয়া বিল তৈরি করেছেন। যা শুধু অসঙ্গতিপূর্ণই নয়, রীতিমতো হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা।
উপজেলার রানীবাড়ী চাঁদপুর গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আবাসিক গ্রাহক মোশারফ হোসেন জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যে পরিমাণ ইউনিটের বিল পত্র দেওয়া হয় মে মাসে তার থেকে তিনগুণ বেশি বিল আসে। তিনি জানান গত মাসের থেকে তিনগুণ বেশি বিল এসেছে মিটারের সাথে রিডিং এর কোন মিল নেই মিটার এর সাথে রিডিং মিলাতে গিয়ে দেখে বিলের কাগজে বর্তমানে যত ইউনিট লেখা আছে মিটারের তার ৩৫ ইউনিট এখনো কম আছে।
বিলের কাগজে বর্তমানে রিডিং আছে ৪১০ থেকে ৫৩৫
কিন্তু মিটার এগিয়ে দেখে ৫০০ ইউনিট আছে সে অনুপাতে দেখা যায় ৩৫ ইউনিট বেশি লেখা হয়েছে।
একই গ্রামের আবাসিক গ্রাহক হুমায়ুন কবির
জানান, তার মার্চ মাসে বিদ্যুৎ বিল হয়েছিল ৫৭২ টাকা এবং এপ্রিল মাসে বিল হয়েছিল ১,০৫৬ টাকা। কিন্তু সেখানে মে মাসে বিল এসেছে ১,৮৪৯ টাকা। বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ইউনিট দেখানো হয়েছে ১০,৩৫০ থেকে ১০,৬৮০ কিন্তু মিটারে গিয়ে দেখা যায় বর্তমান ইউনিট ১০,৬১৫ আছে সে অনুপাতে ৬৫ ইউনিট বেশি লেখা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রাহককে এরকম হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
মাঝে মাঝে এরকম বিল বেশি আসে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন তারা যেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুতব্যবস্থা নেয়।
বন্ধু বাজারের আবাসিক বিদ্যুৎ গ্রাহক উজ্জ্বল জানান, তার বাড়িতে প্রতিমাসে ২শ’ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল আসে। কিন্তু এ মাসে ৯শ’ টাকার বিল এসেছে। এ অভিযোগ শুধু হুমায়ুন কবির, মোশারফ হোসেন ও উজ্জ্বল এর নয়, গ্রামের প্রায় ৯০ ভাগ বিদ্যুৎ গ্রাহকের একই অভিযোগ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চাঁপাইনবাবগঞ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শিবগঞ্জ উপজেলার সহকারি জোন ইঞ্জিনিয়ার বলেন এগুলো তো হওয়ার কথা না অনেক সময় তিন মাস রিডিং নেওয়ার পরে শিডিউল পরিবর্তন হয়। তিনি আরো বলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাঠ পর্যায়ে মিটার রিডিং সংগ্রহকারীরা (মিটার রিডার) গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার না দেখে নিজ বাড়িতে বসে আন্দাজে মিটার রিডিং লিখেছে। যার কারণে বিদ্যুৎ বিলে অসঙ্গতি দেখা দিতে পারে। কিছুটা আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে রিডিং সিডিউল আছে এখন বর্ষাকাল চলে একটু ফাঁকা পেলেই রিডিং নিয়ে নেয়া হবে। বিষয়টি বিবেচনায় এনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
সময় জার্নাল/ইএইচ