বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শৈশব হারিয়ে জীবন থেকে যেন হারিয়েছি সব

সোমবার, জানুয়ারী ২২, ২০২৪
শৈশব হারিয়ে জীবন থেকে যেন হারিয়েছি সব

জাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:

কাকডাকা ভোরে  ঘুম ভাঙত আমাদের |  ঘুম ভেঙেই একরাশ শৈশব স্মৃতি ছুঁয়ে দিত কোকিলের কুহুতানের সাথে। শৈশবকে মিস করি জীবনের প্রতিটি লগ্নে। বাসার প্রতিটি কোণে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে আমাদের শৈশব।  দরজার আড়াল,  চালের ড্রাম কিংবা  খাটের নিচে প্রতিনিয়ত আমরা শৈশবকে খুজে বেড়াই।
 
 আইসক্রিমওয়ালা মামাকে দেখলে  শৈশবের সোনালী সময়টা ভেসে উঠে। হাওয়াই মিঠাইওয়ালা তো দুশ্চিন্তার ছাপ কপালে নিয়ে ফুটপাতে বসে থাকে। একমাত্র আমাদের শৈশবটা তার আয়ের বিশাল অংশ জুড়ে মিশে ছিল। আমাদের শৈশবটা ছাড়া তার পোষাচ্ছে না। 
 
 নব স্কুল পড়ুয়া যখন ছিলাম আমরা, ছোট্ট শরীরে ভারী ব্যাগ নিতে হিমশিম খাওয়ার অবস্থায়, তখন রাস্তায় তীক্ষ্ণ চোখে দেখে থাকা কুকুরটার ভয়ে কাঁদো কাঁদো অবস্থা হতো আমাদেট। কুকুরটাও আমাদের ভয় পাওয়া দেখে বাঘ বেশে আমাদের  পিছু নিত। 
 অথচ  বড়দের ধমক খেয়ে সেই কুকুরটা ক্লান্ত হয়ে ধপাস করে বসে যেত।শৈশবের সোনালী দিনগুলো পার হতে গিয়ে  একটু বিদ্যুতের চমকানি তো দেখতে হবে।

 শৈশবে মায়ের এক লোকমা ভাত দেওয়ার পর , মুখ ভর্তি ভাত নিয়ে কৌতূহলী হয়ে আজগুবি সব প্রশ্ন করে,বারবার মা'কে বিরক্ত করেই যেতাম। যেন আদার ব্যাপারী হয়ে জাহাজের খবর রাখতাম মায়ের কাছ থেকে।স্মৃতির ভান্ডে যত কথা আছে সব উজাড় করে দিতাম মায়ের কাছে।  

 জানো! মা বারংবার বিরক্ত হয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েই যেত। শৈশবটা হারানোর পর থেকে মা'কে আজগুবি সব প্রশ্ন করাটা থেমে গেল।অথচ সারাক্ষন ওইসব প্রশ্ন করতেই এখনো মনটা আমাদের উদগ্রীব হয়ে থাকে।
 আগে তো মা যত্নে মাথায় তেল দিয়ে চুল গুলো  একাকার করে রাখতো। শৈশবকে হারানোর পর থেকে কেউ আর যত্নে করে রাখে না।
 
দুপুরের খাবারের পর আমাদের ঘুমানোর জন্য কত জোর করতো। বাইরে থেকে ধেয়ে আসা বন্ধুদের হই হল্লোড় আমাদের চোখের পাতা এক হতে দিতো না। মা আর পরিবারের সদস্যদের  চোখ ফাঁকি দিয়ে বের হওয়ার আমাদের কত পরিকল্পনা!  শৈশবকে হারানোর পর থেকে  সেই পরিকল্পনা আর করা হয় না।
 
 বাবার শাহাদাত আঙুল মুষ্টি বদ্ধ  করে কত ঘুরেছি, ফিরেছি। মানুষের ব্যস্ত ভিড়ে যদি একবার ছোট্ট হাত থেকে আঙুল ছুটে যায় পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ভয়ে আরো শক্ত করে ধরে রাখতে বাবা হাতটা।
সেই শাহাদাত আঙুলটা শক্ত করে ধরে রাখার অধিকারটা হারিয়ে দিয়েছে আমার বেড়ে ওঠা।

প্রাণের মন্দিরে নতুন স্বপ্ন দেখেতাম না যদি জানতাম বাবার শাহাদাত আঙুল ধরে ঘুুরে বেড়ানোর অধিকারটা হারিয়ে ফেলব।মায়ের  আঁচল থেকে দূরে সরতে হবে।  পরিবর্তন স্রোতে আমরা ভেসে যাই কালের যাত্রায় হারাতে বসি আমাদের নীড়কে।

প্রিয় শৈশব!
তোমাকে খুব প্রয়োজন। আর একবার ফিরে এসো আমাদের হৃদয়ের মাঝে।তোমার মাধ্যমে  বাবার সেই শাহাদাত আঙুলটা শক্ত করে আবার ধরতে চাই। মায়ের কাছে সবকিছু উজাড় করে দিতে চাই।
আমাদের নির্জনতা ভঙ্গ করে আবার ফিরে এসো শৈশব। মুক্ত আকাশে নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় দূর দিগন্তের সীমারেখা পর্যন্ত মনকে ও কল্পনাকে প্রসারিত করে দাও। আবারও নীড়ের পথে প্রান্তরে আমাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাও।
 
সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল