মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় খাবার পানির উৎসকে বাঁচাতে কালিগঞ্জে ওয়াপদা স্লুইস গেটের ৩০ ফুট বাঁধ সংস্কার করেছেন স্থানীয় যুব নারীরা। গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের ৩৫ জন নারী সদস্য এই বাঁধ সংস্কারের কাজ করেন।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে নদীর লোনা পানি প্রবেশ করেছে। যার কারণে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পুকুরে লোনা পানিতে ভরে যাওয়ায় পানি খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে কালিগঞ্জের স্লুইস গেটের পাশে প্রায় ৩০ ফুট জায়গায় ভাঙ্গন ধরে। সেটি পুরো ভেঙ্গে গেলে
তলিয়ে যাবে উপজেলার ৭টি গ্রাম। এছাড়া তলিয়ে যাবে ২০ হাজার মানুষের একমাত্র পানির উৎস ওয়াপদা পুকুর।
সম্প্রতি পানি সংকটের সময় এই পুকুরে একেবারে পানি শুকিয়ে যায়। যার ফলে সদরের কয়েকটি গ্রামে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছিলো। তবে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাতে খাবার মতো সামান্য পানি সঞ্চয় হয়েছে। নারীরা মনে করেন এই পুকুরে যদি লোনা পানি
প্রবেশ করে তাহলে এলাকায় খাবার পানি সংকট দেখা দিবে। কারণ এই পুকুর ছাড়া কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে কোন খাওয়ার পানির পুকুর নেই। তাই তারা এই এলাকার একমাত্র পানির উৎসকে বাঁচাতে মাঠে নেমেছেন বলে জানান।
নারী উন্নয়ন সংগঠন বিন্দুর সভাপতি জাকিয়া রাজিয়া বলেন, আমরা যারা কাজ করছি তারা কোন দিন মাটির কাজ করিনি। কিন্তু আজ যেহেতু পানির উৎসকে বাঁচাতে হবে সেহেতু ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। এটি সংস্কার না করলে বাঁধ ভেঙ্গে বহু গ্রাম ভেসে যেত।
সংগঠনের পরিচালক জান্নাতুল মাওয়া বলেন, আমরা এক রকম নিরুপায় হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা নিজেরা কাজ করে এটা সংস্কার করেছি। আসলে বড় বড় ভাঙ্গনের কারণে এটিকে কেউ গুরুত্ব দেইনি। পুরো ভেঙ্গে গেলে তার পর সবাই হাহুতাশ করতো। যেহেতু কেউ এগিয়ে আসেনি এখনো পর্যন্ত তাই আমরাই কাজে নেমে পড়েছি। এই বাঁধ সংষ্কার করে আমরা এটা প্রমাণ করলাম নারীরা কোন কাজে পিছিয়ে নেই।
উলেখ্য, সংগঠনটি একটি যুব নারী বাদি সংগঠন। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে দূর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছে তারা। একই সাথে প্রতি সপ্তাহে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে আন্দোলন করছে সংগঠনটি।
সময় জার্নাল/এমআই