দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলা মীমাংসাকালে স্ত্রীর পক্ষের লোকজনের হামলায় ও মারপিটের শিকার হয়েছেন মামা-ভাগ্নে। মামা অমল মালোকে গুরুতর আহত অবস্থায় গোপালগঞ্জ ২ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রæয়ারী) তার স্বজনরা সাংবাদিকদের জানান, অমল মালোর অবস্থা আশংকাজনক।
জানা যায়, মাদারীপুর জেলার মোস্তফাপুরের অমল মালো (৫৫) ও গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের দিগনগর গ্রামের শিবু মালো (৩০) এরা দু’জন সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অমল মালো বাদি হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিকটিম শিবু মালোর চাচাতো ভাই পরিতোষ মালো বলেন, চার বছর আগে তার চাচাতো ভাই জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামের জুরান মালোর ছেলে শিবু মালোর সাথে সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের রঞ্জন বিশ্বাসের মেয়ে শ্রাবনীর বিশ্বাসের পারিবারিকভাবে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ি বিয়ে হয়। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ-বিবাদ দেখা দেয়। তাদের মধ্যকার দ্ব›দ্ব চরম আকার ধারন করে। চার মাস আগে স্বামী ও পরিবারের লোকজনদের না জানিয়ে শিবু মালোর স্ত্রী শ্রাবনী বিশ্বাস ঢাকায় চলে যায়। দশ দিন পরে শ্রাবনী আবার ঢাকা থেকে তার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জে চলে আসে।
এ পরিস্থিতিতে শ্রাবনীর আত্মীয় সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কর ও মুকসুদপুরের বাটিকামারী ইউনিয়নের মেম্বার ও শিবু মালোর প্রতিবেশী ফায়েক সিকদার দু’পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের উদ্যোগ নেন। পরে শ্রাবনীকে বুঝিয়ে আবারও স্বামীর বাড়িয়ে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এর কয়েকদিন পরেই শ্রবনী তার বাবার বাড়িতে দ্বিতীয় দফায় আবার চলে যায় এবং তার স্বামী শিবু মালোর বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জে আদালতে একটি যৌতুকের মামলা করে। মামলা শুনানীর দিন দুই পক্ষের আইনজীবীদের আপোষ মীমাংসা শর্তে আদালত তাকে জামিন দেয়।
রোববার বিকেলে আইনজীবী সমিতির ভবনের অ্যাডভোকেটদের কক্ষে দু’পক্ষের লোকজনের উপস্থিতিতে আপোশ মীমাংসা শুরু হয়। আলোচনার এক পর্যায় বাটিকামারী ইউপি’র মেম্বার ফায়েক সিকদার ছেলের পক্ষে কথা বলতে গেলে মেয়ে পক্ষের লোকজন তাকে থামিয়ে দেন। এতে দু’পক্ষ কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়লে সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায় শ্রাবনীর মামা কমল মালো ও মিন্টু মালোর নেতৃত্বে তাদের লোকজন শিবু মালো ও তার মামা অমর মালোকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করে।
শ্রাবনী বিশ্বাসের আত্মীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, অভিযোগ এখনও আমার হাতে এসে পৌছায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর