নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাত পোহালেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের ভোট। বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। একইভাবে পরের দিন বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগ প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক।
নির্বাচন সংক্রান্ত উপকমিটির প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের বলেন, সকাল ১০টা থেকে দুপুরে ১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের পর একঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। দুদিনব্যাপী এ নির্বাচনে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষ হবে। এরপর ভোটগণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ভোটগ্রহণের জন্য এরই মধ্যেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন উপকমিটি। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট ভবনের অডিটোরিয়ামে ৫০ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এতে ৫০ জন ভোটার একযোগে ভোট দিতে পারবেন। এবার মোট ৭ হাজার ৮৮৩ জন ভোটার।
এ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ (সাদা প্যানেল) এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) মধ্যে। তবে, এখন অপেক্ষার পালা আইনজীবীরা কী সিদ্ধান্ত নেন।
দেশের আইনজীবীদের অন্যতম সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সভাপতি, সহ-সভাপতি (দুটি), সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সহ-সম্পাদক (দুটি) এবং সদস্য সাতটি পদসহ মোট ১৪টি পদে একবছর মেয়াদের জন্য এই নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে বরাবরই মূলত দুটি প্যানেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। একটি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ মনোনীত প্যানেল (সাদা হিসেবে পরিচিত)। অন্যটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল হিসেবে পরিচিত)। এরই মধ্যে দুটি প্যানেলই তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। এর বাইরেও বেশ কয়েকজন প্রার্থী হয়েছেন।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারির এক নোটিশে সমিতির দুদিনব্যাপী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুসারে, ১২ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় নির্ধারণ ছিল।
নির্বাচনে প্রার্থী: এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন মোট ৩৩ জন। যদিও প্রতিবারের মতো নির্বাচিত হবেন ১৪ জন। যাচাই–বাছাই শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
সাদা প্যানেলের প্রার্থী যারা
তফসিল ঘোষণার পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে আবু সাঈদ সাগর, সম্পাদক পদে শাহ মঞ্জুরুল হক, সহ-সভাপতি পদে রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদকের দুটি পদে মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির (পল্লব) নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। সদস্য সাতটি পদে মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভুইয়া, মাহমুদা আফরোজ, মো, বেলাল হোসেন, খালেদ মোশাররফ, মো. রায়হান রনি, সৌমিত্র সরদার ও রাশেদুল হক খোকন প্রার্থী হয়েছেন।
নীল প্যানেলের প্রার্থী যারা
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ও জামায়াত নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল হিসেবে পরিচিত) প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে এ এম মাহবুব উদ্দিন (খোকন), সম্পাদক পদে মো. রুহুল কুদ্দুস, সহ-সভাপতি পদে মো. হুমায়ুন কবির ও সরকার তাহমিনা বেগম, কোষাধ্যক্ষ পদে মো. রেজাউল করিম, সহ-সম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান ও মো. আব্দুল করিম প্রার্থী হয়েছেন। সদস্যের সাতটি পদে ফাতিমা আক্তার, সৈয়দ ফজলে এলাহী, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. রাসেল আহমেদ, মো. আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ ও মো. ইব্রাহিম খলিল প্রার্থী হয়েছেন।
বিভিন্ন পদে সতন্ত্র প্রার্থী যারা
দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে আরও দুজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন অ্যাডভোকেট মো. ইউনুছ আলী আকন্দ ও অ্যাডভোকেট মো. খলিলুর রহমান বাবলু (এম কে রহমান)। সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভুইয়া ও অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। মো. সাইফুল ইসলাম কোষাধ্যক্ষ পদে প্রার্থী হয়েছেন।
এমআই