মো. জাহিদুল হক, চবি প্রতিনিধি:
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) গণ ইফতার কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
এর আগে রোববার (১০ মার্চ) শাবিপ্রবির এক বিজ্ঞপ্তিতে ইফতার আয়োজন নিষেধ প্রসঙ্গে বলা হয়,
"মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।" যদিও পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে ইফতার আয়োজনের অনুমতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (নোবিপ্রবি) ইফতার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন।
গণ ইফতার কর্মসূচির আহবায়ক চবির আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ ফারাবী বলেন, রমজান আমাদের জন্য একটি নেয়ামতের মাস। ইফতারকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
রবিবার অক্সোফোর্ড ইউনিভার্সিটি তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট দিয়েছে। সেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইফতার পার্টির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইফতার আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য।
সারাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ইফতার অনুষ্ঠান পালনের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ গণ ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছি।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, রমজান এসেছে আমাদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য। ত্যাগ ও সংযমের অমিয় বার্তা নিয়ে এসেছে মুসলিমজাহানের আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র মাহে রমজান। দিনব্যাপী পানাহার ও পাপাচারমুক্ত থাকার মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি, নৈকট্য লাভ এবং পারস্পরিক ভাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার অন্যতম অনুষঙ্গ পবিত্র মাহে রমজান।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা যায় রমজানে ইফতারকে কেন্দ্র করে তৈরী হয় সামাজিক উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, সিনিয়র-জুনিয়রের দূরত্ব ভুলে আনন্দঘন পরিবেশে আয়োজিত হয় ইফতার পার্টি। বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক সংগঠন প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্থানে ইফতার কার্যক্রমের আয়োজন করে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইফতার কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমি এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধীতা ও ধিক্কার জ্ঞাপন করছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমাদের এই গণ-ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে।
গণ ইফতার আয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দাবী জানানো হয়, ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং ক্যাম্পাস ও দেশের সার্বিক সমৃদ্ধির জন্য দোয়া করা হয়।
সময় জার্নাল/এলআর