রাকিবুল ইসলাম, ডিআইইউ প্রতিনিধিঃ
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত দশ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের পর এবার হুমকির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চিরস্থায়ী বহিষ্কারের হুমকি ও পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এর আগে গত ১৩ মার্চ ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) সাংবাদিকতা করায় ১০ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনার পর প্রায় অর্ধশত সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। এরপর কিছুটা নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এরপর থেকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন এই বহিস্কৃত শিক্ষার্থীদের ফোন দিয়ে নানা ভয়-ভীতি দেখাতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি এই শিক্ষার্থীদের বাসায় ফোন দিয়ে অভিভাবককে নানা হুমকি প্রদান করেন।
এবিষয়ে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ানুল হক জানান, প্রতিনিয়ত মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেভাবে প্রতিনিয়ত আমাদের ফোন করে স্থায়ী বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হলে সে দায় প্রক্টর ও ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টির চেয়ারম্যানকে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এমন আচরণ কখনই কাম্য নয়।
সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহাম্মেদ জানান, আমাকে নানাভাবে ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগ করছে যেন আমি এই পেশা ছেড়ে দেই। সত্য প্রকাশ করাই কি আমার অপরাধ? একজন প্রক্টর কি পারে শিক্ষার্থীকে ফোন দিয়ে হুমকি দিতে? তিনি আমাকে জোর করে শোকজের উত্তর দিতে বলেছেন৷ আমি উত্তর দেইনি বলে হোয়াটসঅ্যাপে আবার শোকজের চিঠি দিয়েছে৷ তিনি কিভাবে এটা করতে পারেন৷
সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থী ইসমাম হোসেন মবিন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন অপরাধ ছাড়াই আমাদের সাময়িক বহিষ্কার করেছে৷ এখন আবার প্রক্টর বারবার কল দিয়ে চাপ দিচ্ছে৷ আমরা মত প্রকাশের দাবিতে প্রতিবাদ করছি৷ কিন্তু বারবার তিনি আমাদের চাপ দিয়ে স্থায়ী বহিস্কারের হুমকি দিচ্ছেন৷ এ হুমকি পরিবার অবধি গড়াচ্ছে৷ এটা সম্পূর্ণ অপেশাদার অচরণ৷ এভাবে চাপ দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠরোধের চেষ্টা করা বৃথা৷
এক অভিভাবক বলেন, প্রক্টর আমাদেরকে ফোন দিয়েই বললো আপনার ছেলেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কি কারণে তিনি এমনটা করলো তার সদুত্তর তিনি জানায়নি। শুধু বললো আপনার ছেলেকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। সেটি না নিলে আজীবনের জন্য তাকে বহিষ্কার করা হবে। এছাড়া তিনি নানাভাবে ছাত্রত্ব নষ্ট করার মতো হুমকি দিয়েছেন। একজন প্রক্টরের পক্ষে এমন হুমকি দেয়া আদৌও কতটা যুক্তিসঙ্গত তা আমার বোধগম্য নয়। যেদিন তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিলো সেদিন কেন তাহলে আমাদের জানালো না। তাহলে কি তারা অপরাধকে ঢাকতেই বহিষ্কার করলো!
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন ও রেজিস্ট্রার (ইনচার্জ) মো. আবু তারেক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত দশ শিক্ষার্থীকে এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চলছে নানা সমালোচনা। এ ঘটনা নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ সাংবাদিক নেতারা৷
এমআই