মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রমজান মাস সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসার মাস: তৌফিক সুলতান

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
রমজান মাস সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসার মাস: তৌফিক সুলতান

সময় জার্নাল ডেস্ক:

রোজা’রা মাস নিঃসন্দেহে একটি পবিত্র মাস রমজানের পবিত্রতা রক্ষাকরা সকল মুসলিম এর দ্বায়িত্ব। ইসলাম একটি সুন্দর ও সহজ ধর্ম যা মানুষের জীবন কে সহজ করে দিয়েছে। ইসলাম কখনো কারোর উপর জুলুম করে না এর জন্য রয়েছে বিধিবিধান।

রোজা পালনে রোগ বৃদ্ধি পেলে পরহেজগারি মনে করে রোজা পালন করা অনুচিত। এ অবস্থায় রোজা ভাঙা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা কোরো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ২৯)

মৃত্যুমুখী বৃদ্ধলোক অথবা এমন রোগে আক্রান্ত হলে, যা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই- এমন অক্ষম ব্যক্তি প্রতিটি রোজার পরিবর্তে পৌনে দুই সের গম (ফিতরার পরিমাণ) অথবা সমপরিমাণ মূল্য আদায় করবে। ইসলামের পরিভাষায় এটাকে ফিদিয়া বলা হয়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২৯)

এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন— শক্তিহীনদের কর্তব্য হচ্ছে ফিদিয়া দেওয়া, এটা একজন মিসকিনকে অন্নদান করা। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)

অতিশয় বৃদ্ধের জন্য রোজা পালন জরুরি নয়। তবে ওই ব্যক্তি অন্য কাউকে দিয়ে কাজা আদায় করাবে বা ফিদিয়া দেবে। প্রতিটি রোজার জন্য একজন মিসকিনকে এক বেলা খাবার খাওয়াবে। 

রোজা পালনে অক্ষম ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে যে দান করেন, তাকে ‘ফিদিয়া’ বলে। কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমান বার্ধক্যের কারণে বা অসুস্থতা অথবা অন্য যেকোনো কারণে রোজা পালনে অসমর্থ হলে এবং পুনরায় সুস্থ হয়ে রোজার কাজা আদায় করার মতো সম্ভাবনা না থাকলে তিনি প্রতিটি রোজার জন্য একটি সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ ফিদিয়া প্রদান করবেন।

একজনের রোজা আরেকজন রাখতে পারে না, তাই ফিদিয়া রোজার পরিবর্তে রোজা নয়; ফিদিয়া হলো রোজার পরিবর্তে খাদ্য বা তার মূল্য দিয়ে দেওয়া। ফিদিয়া হলো রোজার ক্ষমতায় তার পরিবর্তে আর্থিক দান বা সদকা। তাই যাকে ফিদিয়া দেওয়া হলো, তার রোজাদার হওয়া জরুরি নয়, যেমন: নাবালেগ মিসকিন শিশু বা অতি বৃদ্ধ দুর্বল ও অক্ষম অসুস্থ অসহায় গরিব ব্যক্তি, যিনি নিজেও রোজা পালনে অক্ষম।

ফিদিয়ার পরিমাণ হলো একেকটি রোজার জন্য এক ফিতরা পরিমাণ। ফিতরার পরিমাণ সম্পর্কে হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘সদকাতুল ফিতর’ হলো এক ‘সা’ (৩ কেজি ৩০০ গ্রাম) খাদ্য বা খাবার। আবু সাইয়িদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমাদের খাদ্য-খাবার ছিল খেজুর, কিশমিশ, পনির ও যব (বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৪-২০৫)।’

রোজা থাকা অবস্থায় যদি রক্তে শর্করা বা ব্লাড সুগারের পরিমাণ কমে যায়, তবে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভেঙে চিনিজাতীয় খাবার খেয়ে রক্তের শর্করা বাড়াতে হবে। কারণ অতি অল্প সময়ের জন্যেও যদি মস্তিষ্কে শর্করার ঘাটতি হয় তবে সেখান থেকে হয়ে যেতে পারে স্থায়ী ক্ষতি। পরে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ভাঙা রোজা পূরণ করে নিন।

ডায়াবেটিক্সদের সাধারণত দুই বেলা ওষুধ দেওয়া হয়। তবে যারা তিন বেলা ইন্সুলিন নেন তাদের উচ্চ মাত্রায় ডায়াবেটিস আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এই ধরনের রোগীদের রোজা রাখা সম্ভব হয় না।

রোজায় বেশি বেশি ইবাদত করতে, নামাজ পড়তে যদি কষ্ট হয় তাহলে এখনই একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে আধুনিক ফিজিওথেরাপি নিলে অনেকাংশে ব্যথা বা অবসাদগ্রস্ত হতে মুক্ত থাকা যায়।
যারা মেরুদণ্ডের সমস্যা, হাঁটু-কোমড়-ঘাড় ব্যথা আর্থ্রাইটিস বা প্যারালাইসিসে ভুগছেন তাদের এই রোজায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

নামাজ সর্বোৎকৃষ্ট ব্যায়াম :
নিয়মিত নামাজ আদায় করলে ঘাড়-কোমড়-হাঁটু ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকা যায়। আর যারা বাতের ব্যথায় আক্রান্ত তারা ব্যথার জায়গায় ৫ থেকে ১০ মিনিট কুসুম গরম পানি বা ঠাণ্ডা পানির স্যাঁক দিতে পারেন।

সায়িন্টিফিক বেইজড ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন, এতে রোজায় কোনো সমস্যা হবে না। বেশি সময় বা খতমে তারাবি নামাজ পড়তে কষ্ট হলে চেয়ারে মাঝে মাঝে নামাজ পড়তে পারেন। আর সূরা তারাবি নামাজ স্বাভাবিক নিয়মেই পড়তে পারেন।

ইফতারে চর্বি ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া মোটেও উচিৎ হবে না। পরিবর্তে ফল, শরবত বা পানীয়জাতীয় খাবার খান। এতে দ্রুত শক্তি পাওয়া যাবে।

যাদের ওজন বেশি তাদের জন্য রমজান মাস সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসার মাস। এই মাসে ওজন ৫ থেকে ১০ কেজি অনায়াসে কমিয়ে ফেলা যায়। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।

তৌফিক সুলতান, ইন্টার্ন শিক্ষার্থী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। 

#২য় পর্ব আগামীকাল।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল