সময় জার্নাল রিপোর্ট : আজ ৭ জুন। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস। ১৯৬৬ সালের এই দিনে পূর্ব পাকিস্তান (আজকের বাংলাদেশ) তখন পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় ঔপনিবেশে পরিণত হয়েছে। পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের সমর্থনে অর্জিত পাকিস্তান, সেই পাকিস্তানের পাঞ্জাবি আমলা ও শোষকরা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের বুকে চাপিয়ে দিয়েছে নির্যাতন ও অধিকার বঞ্চনার হিমালয়। বিপরীতে ১২০০ মাইল দূরে পাকিস্তান রাষ্ট্রের এই পূর্বদিগন্তে স্বাধিকার ও ন্যায্য অর্থনৈতিক অধিকারের দাবিতে জেগে উঠেছে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। এই গণজাগরণকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে জেল-জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী স্বৈরশাসক ও তথাকথিত মৌলিক গণতন্ত্রী আইয়ুব খানকে সমর্থন দিয়ে চুপ ছিলেন। কমিউনিস্টরা গণ-আন্দোলন ত্যাগ করে গ্রামে গেছেন দেশি অস্ত্রে জোতদার-মহাজনদের গলা কেটে খতম করতে, যা তাদের ভাষায় শ্রেণি-সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে এমনি এক সংকটকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান রাওয়ালপিন্ডির গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন এবং ৬ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এই ৬ দফা প্রস্তাবই বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্র। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ আওয়ামী লীগের এই ৬ দফা প্রস্তাবকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করে। শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠেন বঙ্গবন্ধু, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ৬ দফার প্রবক্তা শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শহর-বন্দর-গাঁওগেরাম সফর করে বাঙালির প্রাণের দাবি ৬ দফাকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন। তার নিজের, দলের ও সমর্থকদের ওপর নেমে আসে আইয়ুব খানের জেল-জুলুম-হুলিয়া, বর্ণনাতীত দমন-পীড়ন। বঙ্গবন্ধু দমবার পাত্র নন, তিনি উন্নত শির, বুক চেতিয়ে এগিয়ে যান তার অভীষ্ট লক্ষ্য, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দিকে তথা স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে।
এই ৬ দফাকে ভিত্তি করেই আমরা ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করি আজকের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন।
সময় জার্নাল/আরইউ