সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে অংশ নিলে ভর্তি সংশ্লিষ্ট সকল কাজে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার(২৬ এপ্রিল) সমিতির এক জরুরি সভার (অনলাইন) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকল শিক্ষক গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন।
সভা শেষে গণমাধ্যমে প্রেরিত সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রহমান সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষক সমিতির গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা না নেয়ার দাবি অটুট রয়েছে। তবে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র ঘোষনা করা হয়েছে, যেখানে পনেরো হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করবেন। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কল্যান বিবেচনা করে শিক্ষকতার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ভর্তি পরীক্ষা নেবার দাবী আপাতত স্থগিত করে অত্র শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সম্মানিত শিক্ষকগন অংশগ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, গুচ্ছে যেসব অসামঞ্জস্যতা এবং ত্রুটি রয়েছে ইবি শিক্ষক সমিতি এখনো সেগুলোর বিরুদ্ধে রয়েছে। এছাড়া শিক্ষক সমিতি যে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরিক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তাতেও অটুট রয়েছে। তবে যেহুতু বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ করেছে। অভিভাবকসহ তারা এখানে পরীক্ষা দিতে আসবে। শিক্ষকতার দায়িত্ববোধ থেকে তাদের দিক বিবেচনা করে আপাতত আমরা দাবি স্থগিত করেছি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় ইবি শিক্ষক সমিতি। এরপরও যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গুচ্ছে অংশ নেয় তবে শিক্ষকরা ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষকরা। পরে গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৭তম একাডেমিক কাউন্সিলেও গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপাচার্য লিখিতভাবে ইউজিসিকে জানাননি বলে অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি ইউজিসির নজরে এলে ইবির গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে গুচ্ছের আওতায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দেয়। এদিকে ইউজিসি সভার জন্য ডাকলেও শিক্ষকরা তাতে সাড়া দেয়নি। এছাড়া গুচ্ছ নিয়ে উপাচার্য একাধিকবার শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে বসলেও কোনো সুরাহা হয়নি। শিক্ষকরা শেষ পর্যন্ত নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসেন। সর্বশেষ গত ২ মার্চ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬ মার্চের মধ্যে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা আয়োজনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছিলো। কিন্তু সেই দাবিও হালে পানি পায়নি। এর আগে ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষেও গুচ্ছের নানা ভোগান্তি ও অব্যবস্থাপনার প্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রমের দাবি জানায়। ঐসময়ও তারা প্রথমদিকে গুচ্ছের বিপক্ষে অনড় অবস্থানে থাকলেও পরে শর্তসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে।
এমআই