নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, অসাম্প্রদায়িকতার অনন্য নজির ময়মনসিংহ।
অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও চর্চা করতে হবে।’
শনিবার (১ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে
জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবর্ধনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক সিনিয়র এডভোকেট শাহ মনজুরুল হক, জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।
এসময় ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বাবার বাড়ি মোহনগঞ্জ হলেও ময়মনসিংহ শহরেই আমার জন্ম। আনন্দমোহন কলেজে পড়াশোনা করেছি। এ শহরের অনেক স্মৃতি আছে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর ময়মনসিংহের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
ওবায়দুল হাসান বলেন, দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে মানুষের প্রতি মানুষের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা আইনজীবীদের প্রধান কাজ। ন্যায়বিচারভিত্তিক জীবনমান উপহার দেওয়াই একজন আইনজীবীর কর্তব্য।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, সৃষ্টিকর্তা হয়তো আমাদের সবাইকে একই সামাজিক অবস্থান শিক্ষা কিংবা ক্ষমতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান নাই। কিন্তু নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমরা কে কতটুকু ন্যায়বিচার করতে পেরেছি তিনি সেটা দেখবেন।
ওবায়দুল হাসান বলেন, বার ও বেঞ্চ উভয়ের সমন্বয়ে বিচার বিভাগ। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়। আপনাদের প্রাথমিক কর্তব্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। আইনের বিধি বিধানের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা রেখে আদালতকে সহযোগিতা দেওয়া। তাই আপনারা খেয়াল রাখবেন আদালতে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব যেন না হয় যার কারণে বিচার প্রার্থীর মনে আদালত সম্পর্কে দ্বিধা বা সংশয় তৈরি হয়।
তিনি বলেন, ‘দায়িত্বভার গ্রহণের পর আমি বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন, বিচার সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণ তথা বিচার বিভাগের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যাঁরা আইনের গবেষণা করতে চান, তাঁদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি রিচার্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খুলেছি। সেখানে আইনজীবী ও বিচারকগণ গবেষণার সুযোগ পাবেন।’
বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক সিনিয়র এডভোকেট শাহ মনজুরুল হক বলেন, মাননীয় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ পাওয়ার পর ময়মনসিংহের মানুষ অতন্ত আননন্দিত হয়েছে। এই অঞ্চলের একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তি হিসবে আপনাকে সবাই জানে, আজকের দিনে ময়মনসিংহের সবাই আপনাকে বরণ করে নিচ্ছে মাননীয় প্রধান বিচারপতি।
এসময় তিনি বলেন, মাননীয় বিচারপতি আমরা আইনজীবীদের আস্থার জায়গা আপনি। আপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের সকল প্রত্যাশা পূরণ হবে।
এর আগে সকালে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদলতে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি।
এমআই