খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়িতে প্রান্তিক চাষীদের উৎপাদিত ফসলের উপর তিনটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান- জেলা পরিষদ, বাজার ফান্ড ও পৌরসভা কর্তৃক অবৈধভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন ফলদ বাগান মালিক সমিতি ও সাধারন চাষীরা। সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় শাপলা চত্বরে বিশাল মানববন্ধনের পর জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয় ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন," জেলাব্যাপী বহু কষ্টের বিনিময়ে প্রান্তিক চাষীদের আম, কাঁঠাল, লিচুসহ উৎপাদিত ফসলের উপর তিনটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অবৈধভাবে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। অনেক সময় টোল আদায়ের রশিদ ঠিকমতো দেওয়া হয় না। যা চাঁদাবাজির সামিল। তাছাড়া বাজার ফান্ড জেলা পরিষদেরই অধীনস্ত একটি প্রতিষ্ঠান। তবে বাজার ফান্ডের টোল দেওয়ার পরে নতুন করে জেলা পরিষদ কেন টোল আদায় করে তার কোন সদুত্তর কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা পাচ্ছি না।
বক্তারা আরো উল্লেখ করেন, পাশ্ববর্তী রাঙামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় আমের ক্ষেত্রে গাড়িভেদে (ছোট- বড়) ২০০-৬০০ টাকা হারে আদায় করে থাকে। অথচ খাগড়াছড়িতে জেলা পরিষদ ক্যারেট প্রতি ১৫ টাকা হারে আদায় করে। যা তিন সাইজের গাড়ী হিসাবে ১৮০০ টাকা, ৩৪৫০ টাকা ও ৫২৫০ টাকা। পৌরসভাও একই হারে আদায় করছে। বাজার ফান্ড ১০ টাকা ক্যারেট প্রতি আদায় করছে। যা একেবারেই অস্বাভাবিক বটে। এসব অন্যায্য টোলের ভয়ে সমতল অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আমাদের জেলায় খুব বেশি না আসার ফলে উৎপাদিত ফসল বিক্রির ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।"
প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে দেওয়া স্মারকলিপিতে চারটি দাবী তুলে ধরেছেন চাষীরা : এক, অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ করা। দুই, উদ্যোক্তা কৃষকদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋন প্রদান। তিন, অবৈধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টোল আদায় কেন্দ্রসমূহের ইজারা বন্ধ করা। চার, এস এ পরিবহন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তরুন আলো দেওয়ান, জ্ঞান জ্যোতি চাকমা, বাবুশ্যি চৌধুরী, মোঃ তসলিম উদ্দিন, মোঃ তাহের, দেবাশীষ চাকমা প্রমুখ।
টোল আদায়ের এই বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চলতে থাকলে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়বে এখানকার দ্রুত বিকাশমান কৃষিজপণ্য উৎপাদন ব্যবস্থা। "দেশের উন্নয়নের জন্য এক খন্ড ভুমিও যেন পতিত না থাকে" - কৃষি ও কৃষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন উৎসাহ জাগানিয়া শ্লোগান পাহাড়ের ভাঁজেই আটকা পড়বে। এমনটাই মনে করেন পার্বত্য খাগড়াছড়ির কৃষি সচেতনমহল।
সময় জার্নাল/এলআর