নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্ষমতায় থাকাকালে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে সপরিবারে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। তবে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির তলবে বেনজীর আহমেদের পর তার স্ত্রী-সন্তানও সাড়া দিলেন না।
সোমবার (২৪ জুন) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিসান মির্জা, দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাশিন রাইসা বিনতে বেনজীরকে তলব করেছিল দুদক। তবে এদিন তাদের কেউই সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আসেননি।
এর আগে গতকাল (রোববার) বেনজীর আহমেদকে দুদকে হাজির হওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। তিনিও দুদকে হাজির হননি।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সকাল ১০টা থেকে অপেক্ষায় ছিলেন বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও সন্তানরা আসবেন বলে। অপেক্ষায় ছিলেন গণমাধ্যম কর্মীরাও। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কেউ আসেননি।
এদিকে সময় চেয়েও দুদকে হাজির হননি বেনজীর আহমেদ। তবে তিনি একটি চিঠি পাঠিয়ে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের লিখিত জবাব দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চিঠি পর্যালোচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দুদক সচিব বলেন, বেনজীর আহমেদ আইনজীবীর মাধ্যমে গত ২১ জুন দুদক চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এবারের চিঠিতে নতুন করে সময়ের আবেদন করেননি। লিখিত বক্তব্যে তার অভিযোগগুলোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কমিশন বেনজীরের দেওয়া চিঠির বক্তব্য পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান খোরশেদা ইয়াসমিন।
জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ গত ৪ মে সপরিবারে দেশ ত্যাগ করেন। এর আগে তাকে গত ৬ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। বিদেশে অবস্থান করায় তিনি ওইদিন দুদকে হাজিন হননি। পরে তিনি সময় চেয়ে আবেদন করলে তাকে ১৬ দিনের সময় দিয়ে রোববার ডাকা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুদক বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে গত ২২ এপ্রিল। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকের তলবি নোটিশ পাঠায় হয় গত ২৮ মে। এর আগে গত ৪ মে তিনি সপরিবারে দেশ ত্যাগ করেন। বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তাদের বিরুদ্ধে সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বিস্তারিত তদন্ত করেছে। এরপরই গণমাধ্যমে তাদের অস্বাভাবিক সম্পদের খবর প্রকাশ পায়।
এমআই