রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সন্ত্রাসী হাফিজ’র বহিষ্কার চান ইবি শিক্ষার্থীরা

সোমবার, জুলাই ১৫, ২০২৪
সন্ত্রাসী হাফিজ’র বহিষ্কার চান ইবি শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি:

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর করা মন্তব্যের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রকে মারধর ও হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজের বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে শহীদ জিয়াউর রহমান আবাসিক হলের ৪০২ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজ উল হক। এছাড়া ভুক্তভোগীর বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে অভিযুক্ত হাফিজকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। 

অভিযুক্ত হাফিজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তার ছাত্রত্ব নেই বলে জানা গেছে।  

লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, ভুক্তভোগী মাহফুজ শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ৪২০ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষবর্ষের সোহানুর রহমান তার রুমের সামনে এসে ছাত্রলীগের প্রোগামে যাওয়ার জন্য তাকে ডাক দেন। এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত হাফিজ রুমের সামনে আসে এবং রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চান। ভুক্তভোগী মিছিলে গিয়েছে জানতে পেরে হাফিজ তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, ‘তুই কি রাজাকার? রাজাকার না হলে ওই মিছিলে গেলি কেন?’ এরপর এ নিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের মধ্যে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে কক্ষে থাকা ঝাড়ু দিয়ে হাফিজ ভুক্তভোগী মাথায় দুই বার সজোরে আঘাত করে। আঘাতের ফলে ওই ঝাড়ুটি ভেঙ্গে যায়। পরে হাফিজ আরও মারতে উদ্যত হলে সেখানে উপস্থিত সোহান এবং সৌরভ শেখ হাফিজকে প্রতিরোধ করে। পরে যাওয়ার সময় হাফিজ ভুক্তভোগীকে এই বলে শাসায় যে ‘ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম থেকে ফিরে যেন তোকে হলে না দেখি। যদি কেউ কিছু বলে, বলবি আমার নাম হাফিজ। তোর কে আছে দেখবোনে।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাহফুজ উল হক বলেন, প্রত্যেকের ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আন্দোলনে যাওয়ার কারণে তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি ও মারধর করতে পারেন না। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমার যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান এবং হুমকি ও মারধরের বিষয়ে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘুম থেকে উঠেই ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে গিয়েছি। আমি আর সোহান ওই হল দেখাশোনা করি। তাই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

অভিযুক্ত হাফিজ অভিযোগ অস্বীকার করলেও ঘটনার সময় উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মী সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমি সকালে ছাত্রলীগের মিছিলের জন্য ডাকতে গিয়েছিলাম। মাহফুজের রুম থেকে পাশের রুমে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই হাফিজ ভাই হিট করে বসছে। পরে আমি ভাইকে টেনে নিয়ে আসি।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘ওই ছেলেটা (ভূক্তভোগী) গতকাল রাতে (রবিবার) ‘রাজাকার রাজাকার’ শ্লোগান দিয়েছিল। এ কারণে হয়তো কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে মারধরের বিষয় ভিত্তিহীন। মারধরের বিষয়ে আমরা সমর্থন করি না। যদি এমন হয়ে থাকে সাংগঠননিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দীকি আরাফাত বলেন, ‘আমি যতদূর খোঁজ নিয়ে জেনেছি মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে যদি বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, হলে যারা থাকে সবাই তো ছাত্রলীগ। তারাই বিচার করবে। সভপতি-সেক্রেটারি বিচার না করলে তারপর আমি দেখবো। আর আশ্বস্ত করছে এমন ঘটনা ঘটবে না।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমার বডির সঙ্গে সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল