শারমিন আক্তার কেয়া, কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় মেয়েদের হল "শেখ হাসিনা" হলের নাম পরিবর্তন করার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তারা হলটির নাম পরিবর্তন করে রেখেছে 'সুনীতি-শান্তি হল'। শনিবার (৩ আগস্ট) 'হলের নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে' দেয়া একটি বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞাপ্তিতে জানানো হয়, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'শেখ হাসিনা' হলের সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে হলের নাম পরিবর্তন করে "সুনীতি-শান্তি" রাখা হলো। ৩ আগস্ট, ২০২৪ তারিখ হতে হলের পূর্ব নাম 'শেখ হাসিনা' অকার্যকর বলে বিবেচিত হবে এবং নতুন নাম "সুনীতি-শান্তি" কার্যকর হবে। এ প্রসঙ্গে হল প্রশাসনকে অনতিবিলম্বে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার আহ্বান জানানো হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, 'সুনীতি চৌধুরী এবং শান্তি ঘোষ নামের দুই মহিয়সী নারী তৎকালীন ভারতবর্ষে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে ব্রিটিশ শাসকের অন্যায়, অবিচার এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। সেই সময়ে কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা স্কুলপড়ুয়া এই দুই নারী ব্রিটিশরাজ্যের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অথচ তাঁদের সাহসিকতার কথা কখনও সামনে আসেনি। তাঁদের প্রতি সম্মানার্থে হলের নামকরণ "সুনীতি-শান্তি" হল করা হলো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৪ তম আবর্তন ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার মোহনা বলেন, 'আন্দোলনের পর থেকেই মনে হচ্ছিলো যার বিরুদ্ধে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি তার নামের হলেই আমাদের আবাসিক হল। সর্বশেষ যখন স্বৈরাচার সরকার হাসিনার পতনের দাবী উঠলো তখনো মনে হলো এই নামের হলে থাকতে আমাদের বিবেকে বাধবে। দেশে যেখানে ১ দফা দাবী, শেখ হাসিনার পতনের তখন আমার থাকার ঠিকানাও এই নামে থাকার প্রশ্নই আসে না। বুটেক্স,চুয়েটের মতো অনেকেই তাদের হল গুলোর নাম পরিবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের হলের নাম সুনীতি-শান্তি নামে পরিবর্তন করার। আমার অস্তিত্বের ঠিকানায় স্বৈরাচারের নামেরও জায়গা নাই।'
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মেহের নিগার বলেন, 'আমি আমার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বর্তমান মানসিক অবস্থা বুঝতে পারছি। হলের নাম পরিবর্তনের বিষয়টিও চলমান পরিস্থিতির প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ। তাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই, তবে এই বিষয়টি পুরোপুরি হল কর্তৃপক্ষের ওপর নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে আমাদের যে নির্দেশনা দিবে সে অনুযায়ীই আমরা কাজ করব।'
এমআই