মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তী ঐতিহ্যবাহী একটি উপজেলা ‘চৌদ্দগ্রাম’। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনে পুরো পৃথিবীজুড়ে এ উপজেলা বেশ পরিস্থিত। গত সপ্তাহে ভারি বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তাৎক্ষণিক সাবেক এমপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহেরের পরামর্শক্রমে গ্রামভিত্তিক জামায়াত নেতাকর্মীরা পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করে সরকারি ও বেসরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এরপর পুরো উপজেলাজুড়ে পানিবন্দিদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে রান্না করা খাবার বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।
উপজেলা জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীন বাংলাদেশে অতীতে কখনো এরকম বন্যা পরিস্থিতি দেখেনি চৌদ্দগ্রামবাসী। গত ২২ আগস্ট থেকে জামায়াত নেতাকর্মীরা সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ ও বিভিন্ন বিল্ডিং বাড়ির ১০৬ আশ্রয় কেন্দ্রে ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। প্রথম ৪ দিন প্রত্যেক আশ্রয় কেন্দ্রের টিমের মাধ্যমে আশ্রয়কেন্দ্র ও পাশ^বর্তী গ্রামগুলোর পানিবন্দি মানুষের মাঝে ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।
এরপর থেকে প্রতিদিন ২-৩ বেলা রান্না করা খাবার দেয়া হচ্ছে। গত দুইদিন বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মানুষ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। এবার দ্বিতীয় ধাপে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেয়াজ, লবনসহ ১০ হাজার ফুড প্যাক বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যায় যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে তালিকা করা হচ্ছে। সাধ্য অনুযায়ী জামায়াত ক্ষতিগ্রস্তদের পূণর্বাসন করবে।
এসব কাজ করতে গিয়ে জামায়াত নেতাকর্মীদের দিনরাত একাকার হয়ে গেছে। বানভাসিদের সেবায় নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রাম থেকে শুরু করে উপজেলার নেতাকর্মীদের। বানভাসিদের সেবা কার্যক্রম তদারকি করছেন উপজেলা জামায়াত আমীর মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারী বেলাল হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারী কাজী মোঃ ইয়াছিনসহ সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রামের নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার উপজেলা জামায়াত আমীর মু. মাহফুজুর রহমান ও সেক্রেটারী মু. বেলাল হোসাইন বলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের পানিবন্দি মানুষের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। বানভাসিদের কথা বিবেচনা করে ২৪ আগস্ট তিনি গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল করে ২৩-২৫ আগস্ট পুরো উপজেলা পরিদর্শন করে বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন।
উপজেলাজুড়ে তিন ধাপে জামায়াত কাজ করছে। এরমধ্যে; প্রথমত-বানভাসিদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া ও শুকনো খাবার বিতরণ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ভারি খাবার বিতরণ চলছে। তৃতীয়ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসিদের পূণর্বাসনের তালিকা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর