বুধবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪
সময় জার্নাল ডেস্ক:
দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া নাজমুল খান স্বপ্ন দেখেন এক সময়ে দেশের সেরা একজন সাইকেল (কসরত) স্টান্ট হওয়ার। পড়াশোনার চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত সাইকেল স্টান্ট করে যাচ্ছে নাজমুল।
এরই মধ্যে রপ্ত করেছেন বেশ কয়েকটি সাইকেল স্টান্ট। যা দেখে মুগ্ধ সবাই। উপজেলার সেরা সাইকেল স্টান্টের দাবিদার এখন নাজমুল।
অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন ইউটিউবে আকিব আহমেদের সাইকেল স্টান্টের ওপর একটি ভিডিও দেখে সে উদ্ধুদ্ধ হয়ে আগ্রহ বাড়ে সাইকেল স্টান্টের প্রতি। সেখান থেকে মূলত সে অনুপ্রাণিত হয়ে নাম লেখান সাইকেল স্টান্টের মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায়।
জানা যায়, ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ওলাইল গ্রামের সালাউদ্দিন খানের ছেলে নাজমুল। বন্ধুর পুরনো একটি সাইকেল দিয়ে প্রাকটিস শুরু করলেও মায়ের কাছে বায়না ধরে একটি স্টান্ট করার সাইকেল কিনে দেয়ার। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ বলে নাজমুলের মা প্রথমে সাইকেল কিনে দিতে রাজি হয়নি। নাজমুল তার মাকে কথা দেয়, আমি নিয়ম মেনে সব কিছু করবো।
তখন তার মা রাজি হলে একটি সাইকেল কিনে দেয়। পুরোদমে শুরু করে সাইকেল স্টান্টের কাজ। ইতোমধ্যেই রপ্ত করেছে ব্যাক হুইলি, হুইলি সার্কেল, রোলিং, হাই চেয়ার, ফ্লাই ম্যাংগো, সার্ফিং, স্টিম হেড, বার রাইড, বানি হাফ ইত্যাদি।
আরো জানা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নবাবগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ৩ ঘণ্টা প্র্যাকটিস করে নাজমুল। প্রথম প্রথম প্র্যাকটিস করতে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা পেলেও তা গুরুতর ছিল না। এখন পুরোপুরি আয়ত্বে আসায় ঘটছে না কোনো দুর্ঘটনা। নাজমুলের সাথে তুষার খান ও মো: ফাহাদ নামে আরো দুইজন একইসাথে সাইকেল স্টান্টে অংশ নেয়। এ উপজেলায় ১৫ জন তরুণ সাইকেল স্টান্টার থাকলেও নেই কোনো প্রতিযোগিতার সুযোগ।
এ বিষয়ে কথা হয় নাজমুলের সাথে। সে জানান, ‘বর্তমান প্রজন্ম মোবাইল ফোনে আসক্তের পাশাপাশি মাদকের ভয়াবহ ছোবল তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে ভালো কিছু করার চিন্তা থেকে আমি সাইকেল স্টান্ট বেছে নিয়েছি। অনেকেই মনে করেন, যারা সাইকেল স্টান্ট করে তারা উচ্ছৃঙ্খল এমন ধারণাও ভুল। কারণ, একজন মানুষ যখন কোনো একটি নিদিষ্ট বিষয়কে টার্গেট করে কাজ করে তখন মাথার ওপর ভীষণ চাপ থেকে। এজন্য অন্য কিছু করার বিষয়টি মাথায় আসে না।
তিনি আরো জানান, ‘আমি আমার মাকে কথা দিয়েছি একদিন দেশের বড় একজন সাইকেল স্টান্ট হবো। আমি আমার মায়ের দেয়া কথা যেন রাখতে পারি সেজন্য সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমি যেনো দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সবার দোয়া কামনা করেছে ক্ষুদে সাইকেল স্টান্ট নাজমুল।
নাজমুলের মা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বলে আমি প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু একটা সময়ে দেখলাম সাইকেল স্টান্ট করার পরও ওর আচার স্বাভাবিক দিন দিন বিনয়ী হচ্ছে। তখন আমি আমার মতো করে গাইড দিয়ে রাখছি। নাজমুলের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সবার দোয়া কামনা করছি।’
সময় জার্নাল/এলআর